BanglaNews24
বঙ্গবাজারে বুলডোজার

বঙ্গবাজারে বুলডোজার

*ঢাকা:* আগের ঘোষণা অনুযায়ী পুড়ে যাওয়া বঙ্গবাজারে অস্থায়ী দোকানপাট ভেঙে ফেলা হচ্ছে। ঈদুল ফিতরের পাঁচ দিনের মাথায় সোমবার (১৫ এপ্রিল) সকাল থেকে বুলডোজার দিয়ে অস্থায়ী দোকানপাট ভেঙে ফেলার কাজ শুরু হয়। প্রথম দিন প্রায় এক তৃতীয়াংশ দোকানপাট ভেঙে ফেলা হয়েছে। বিকেলে সরেজমিনে দেখা যায়, বুলডোজার দিয়ে শতাধিক দোকানপাট ভেঙে ফেলা হয়েছে। ভেঙে ফেলা দোকানপাটের আসবাবপত্র ও কাঠ নিয়ে যাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। কেউ কেউ আসবাবপত্র বিক্রি করে দিয়েছেন। আবার কেউ ভেঙে ফেলা আসবাবপত্র কুড়াচ্ছেন। ব্যবসায়ীরা বলছেন, দ্রুত যেন মার্কেট নির্মাণ শেষ করে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের মধ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়। গত বছরের এপ্রিলে বঙ্গবাজারে আগুন লেগে পুরোটাই পুড়ে যায়। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় কাপড় ও গার্মেন্টস পণ্যের ব্যবসায়ীরা। পরে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধানে অগ্নিকাণ্ডস্থল ব্যবসায়ীদের জন্য প্রস্তুত করা হয়। বঙ্গবাজারের ১ দশমিক ৭৯ একর জায়গাজুড়ে বালু ও ইট বিছিয়ে ঘটনার আট দিন পর মার্কেটে কাঠের চৌকি পেতে জামা-কাপড় বিক্রি শুরু করেন ব্যবসায়ীরা। পবিত্র ঈদ-উল-ফিতরের পরেই পুড়ে যাওয়া বঙ্গবাজার মার্কেটের নির্মাণ কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছিলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। গত ১৩ মার্চ সেগুনবাগিচায় এক অনুষ্ঠানে মেয়র জানিয়েছিলেন, ক্ষতিগ্রস্ত মার্কেটসহ অবকাঠামো উন্নয়নে এই ওয়ার্ডে (২০ নম্বর ওয়ার্ড) আমাদের ছয়শ কোটি টাকার বেশি কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এখন যেভাবে পরিচালিত হচ্ছে, আগামী ঈদ-উল-ফিতর পর্যন্ত বঙ্গবাজারে সেভাবেই ব্যবসা পরিচালিত হবে। ঈদের পরেই আমরা সেখানে নতুন মার্কেট নির্মাণ কাজে হাত দেবো। আমাদের দরপত্র কার্যক্রম প্রায় শেষ। সেখানে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন আমরা আবারও তাদেরকে সেখানে উঠিয়ে দিতে পারব। আমরা আশা করছি, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা এই মার্কেটের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। অস্থায়ী দোকানপাট ভেঙে ফেলার স্থানে একটি বুলডোজার দেখা যায়। মার্কেট ভেঙে ফেলার কাজে নিয়োজিত এনডিই নামের ওই প্রতিষ্ঠানের একজন কর্মী জানান, সকাল থেকে মার্কেট ভেঙে ফেলার কাজ শুরু করেছি। ব্যবসায়ীদের আগে থেকেই নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। তাদের চান রাত পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়। দোকানের মালাপত্র সবাই নিয়ে গেছেন। মেয়েদের কাপড়-চোপড় বিক্রি করা ২০৫৩ নম্বর দোকানি ইদ্রিস আলী ও মজিবুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, আমরা নোটিশ পেয়েছিলাম। দোকানের মাল সরিয়ে নিয়েছি আগেই। দুই বছরের মধ্যে মার্কেট কমপ্লিট হবে বলে আমাদের জানানো হয়। তারপর দোকান বরাদ্দ দেওয়া হবে। এখন কি করবো আল্লাহ জানে…। গার্মেন্টস পণ্যের ১৯৩২ নম্বর দোকানি রাঙা জানান, কমিটির মাধ্যমে আমাদের নোটিশ দেওয়া হয়েছে। মালপত্র ঈদের আগেই সরিয়ে নিয়েছি। আমরা ভাড়াটিয়া ব্যবসায়ী। ক্ষতিগ্রস্ত তো আমরাই। আমাদের অনুদানের টাকা দেয়নি, দোকানও বরাদ্দ দেয়নি। হিসেবে তো আমরা দোকান পাই। প্রধানমন্ত্রী ও মেয়রের কাছে আকুল আবেদন, আমাদের যেন বরাদ্দ দেয় অথবা পুনর্বাসন দেয়। প্রয়োজনে আমরা নির্মাণ খরচ দেবো। আমাদের যেন নিরাশ না করে। প্যান্ট-শার্টের ২১৭ নম্বর দোকানদার জিসান জানান, ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম ছিল। ঈদের আগে সাইনবোর্ড টাঙ্গিয়ে দিয়েছে। আমাদের দাবি, যাদের যথাযথ কাগজপত্র আছে তাদের যেন দোকান বরাদ্দ দেয়। আমরা মালপত্র সরাতে পারছি। ১৫২ নম্বর দোকানের মালিক রাব্বী জানান, আমার দোকানে শিশুদের জামা-কাপড় ছিল। মালাপত্র আগে সরিয়ে নিয়েছি। আজকে কাঠগুলো নিয়ে যাচ্ছি। দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আবু নাছের বাংলানিউজকে বলেন, বঙ্গবাজারে মার্কেট নির্মাণের জন্য ঈদের আগেই নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। এনডিই নামের প্রতিষ্ঠান মার্কেট নির্মাণ করবে। তারা কাজ শুরু করেছে। বাংলাদেশ সময়: ২১২৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৫, ২০২৪ এমআইএইচ/এএটি
Published on: 2024-04-15 17:42:14.485533 +0200 CEST