বাংলাদেশ প্রতিদিন
পলাতক শীর্ষ সন্ত্রাসী তানভীর ইসলাম জয় মারা গেছেন

পলাতক শীর্ষ সন্ত্রাসী তানভীর ইসলাম জয় মারা গেছেন

ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ডের অন্যতম সদস্য পলাতক শীর্ষ সন্ত্রাসী খোন্দকার তানভীর ইসলাম জয় মালয়েশিয়ায় মারা গেছেন। কুয়ালালামপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১২ এপ্রিল তিনি মারা যান। একাধিক সূত্র বলছে, নব্বই দশকের আতঙ্ক ‘সেভেন স্টার’ গ্রুপের অন্যতম সদস্য তানভীর ইসলাম জয় দীর্ঘদিন ধরে কিডনি রোগে ভুগছিলেন। নিয়মিতভাবে তাকে ডায়ালাইসিস করতে হতো। সবশেষ গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তিনি ভর্তি হন মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরের হসপিটাল কাউন্সিলর টংকু ইউ কে-তে। গত ১২ এপ্রিল সেই হাসপাতালের চিকিৎসক প্রফেসর ডক্টর ফরিদা মোহা. নুর স্বাক্ষরিত ডেথ সার্টিফিকেট বাংলাদেশ প্রতিদিন-এর হাতে এসেছে। সেখানে তার নাম লেখা আছে তানভীর রানা। যুক্তরাষ্ট্র থেকে তার বোন মালয়েশিয়ায় যাওয়ার পর তাকে সেখানেই দাফন করা হবে বলে সূত্র নিশ্চিত করেছে। পুলিশ সদর দপ্তরের ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরো'র (এনসিবি) কাছে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয় আজ সন্ধ্যায়। এই ডেস্কের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) আলী হায়দার চৌধুরী বলেন, যথাযথ চ্যানেলে বিষয়টি নিশ্চিত হবার পরই আমরা মন্তব্য করতে পারবো। একাধিক সূত্র বলছে, শীর্ষ সন্ত্রাসী জয় বাংলাদেশ ে কয়েক ডজন খুন, চাঁদাবাজি ও অপহরণ মামলায় অভিযুক্ত। বাড্ডার রাইন হত্যাকাণ্ডের পর আত্মগোপনে চলে যান জয়। ২০০৫ সালে বাংলাদেশ ের অনুরোধে ইন্টারপোল ‘রেড কর্নার নোটিশ’ জারি করে তার বিরুদ্ধে। ২০০৬ সালের ১৪ মে বিদেশে কাজের জন্য বাংলাদেশ ি শ্রমিকদের নিয়ে যাওয়া সংস্থা ‘তুর্কি অ্যাসোসিয়েট’-এর মালিককে আট লাখ মার্কিন ডলার চেয়ে ফোন করে জয়। টাকা না দেওয়ায় ওই সংস্থার অফিসে ঢুকে ছয় জনকে গুলি করে খুন করে জয়ের দলবল। কলকাতায় জয় পাসপোর্ট তৈরি করে তানভীর রানা নামে। ২০০৭ সালে বাগুইআটির চিনার পার্কের একটি বাড়ি থেকে ভারতের সিআইডি জয়কে গ্রেফতারের পর এ বিষয়টি উঠে আসে। সূত্র বলছে, ২০১১ সালে পর্যটক ভিসা নিয়ে জয় পাড়ি জমান কানাডায়। টরোন্টোর শহরতলি আয়াক্সে একজন সফল ব্যবসায়ী হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হন। সেখানে তার প্রতিষ্ঠানের নাম ছিল ‘এসজে ৭১’। ২০১৮ সালে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের আনন্দ বাজার পত্রিকায় ‘ বাংলাদেশ ের শীর্ষ সন্ত্রাসী জয়-ই কি কানাডার ব্যবসায়ী তারেক?’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ হবার পরই বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। দফায় দফায় কানাডার অভিবাসন দফতর তাকে তলবের মাঝেই ওই বছরের অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে কানাডা থেকে উধাও হয়ে যান তিনি। তবে ২০১৯ থেকে তিনি মালয়েশিয়া, অস্ট্রেলিয়া এবং থাইল্যান্ডে বসবাস শুরু করেন। আনন্দ বাজার পত্রিকার সেই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছিল, গোয়েন্দারা নির্দিষ্টভাবে কয়েকটি পয়েন্ট উল্লেখ করছেন। যার মধ্যে রয়েছে ১. ২০০৫ সালে খোন্দকার তানভীর ইসলাম ওরফে জয়ের যে ছবি ইন্টারপোলের রেড কর্নার নোটিশে রয়েছে, তার সঙ্গে ২০০৭ সালে কলকাতায় গ্রেফতার হওয়া জয়ের ছবি এবং তারেক রানার সাম্প্রতিক ছবিতে সাদৃশ্য রয়েছে। ২. খোন্দকার তানভীরের বাবার নাম এবং তারেক রানার বাবার নাম একই- খোন্দকার নজরুল ইসলাম। ৩. খোন্দকার তানভীর এবং তারেক রানার জন্মসালও একই- ১৯৬৭ সাল। ৪. অতীতে দু’জনেরই দু’পায়ে অস্ত্রোপচার হয়েছে, তার চিহ্নও রয়েছে।
Published on: 2024-04-13 17:24:51.530213 +0200 CEST