ঢাকাট্রিবিউন
ঢাকার পাঁচ স্থানে হবে আধুনিক ট্রাফিক পুলিশ বক্স

ঢাকার পাঁচ স্থানে হবে আধুনিক ট্রাফিক পুলিশ বক্স

রাজধানী ঢাকার ফুটপাতে, সড়কের পাশে অপরিকল্পিতভাবে তৈরি করা হয়েছে ট্রাফিক পুলিশ বক্স। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে পথচারীদের চলাচল। এছাড়াও এসব ট্রাফিক পুলিশ বক্সে পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা না থাকায় নানা সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে পুলিশ সদস্যদের। এসব সমস্যা সমাধানে আধুনিক ট্রাফিক পুলিশ বক্স নির্মাণের প্রস্তুতি নিচ্ছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি)। সম্প্রতি ফার্মগেটে আধুনিক ফুট ওভারব্রিজের পাশে নতুন একটি এলিভেটেড ট্রাফিক বক্স নির্মাণ করেছে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ। তবে সেটি যথাযথ নয় বলে দাবি করেছেন সেখানে দায়িত্ব পালন করা এক ট্রাফিক পুলিশ সদস্য। নাম গোপন রাখার শর্তে অনলাইন সংবাদমাধ্যম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, “আমরা সিগন্যালের পাশেই থাকি। আর এখানে যেহেতু বেশি গাড়ি চলাচল করে, তাই ট্রাফিক বক্স সিগন্যালের পাশে থাকলে বেশি সুবিধা হয়। এছাড়াও নতুন এই বক্সে ওঠানামা কঠিন, আকারেও ছোট।” ডিএনসিসি জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে রাজধানীর পাঁচ স্থানে প্রায় ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে পাঁচটি আধুনিক পুলিশ বক্স নির্মাণ করা হবে। এসব বক্সে আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসহ টয়লেট ও শীতাতপ-নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা থাকবে। এই পাঁচটি জায়গা হচ্ছে- জাহাঙ্গীর গেট, খামারবাড়ি ইন্টারসেকশন, মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মোড় এবং তেজগাঁওয়ের লাভ রোড। ইতোমধ্যে বক্সগুলো নির্মাণের জন্য দরপত্র ঘোষণা করা হয়েছে। ১৫ ফেব্রুয়ারি দরপত্র জমা দেওয়ার শেষ সময়। চলতি বছরের জুনের মধ্যে এর নির্মাণকাজ শেষ করা লক্ষ্য। ডিএমপির সঙ্গে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য আলোচনা চলছে বলে জানায় ডিএনসিসি। আধুনিক পুলিশ বক্সের বিষয়টিকে স্বাগত জানিয়েছেন নগর পরিকল্পনাবিদরা। তারা বলেন, “দীর্ঘদিনের এই সমস্যা সমাধানে উদ্যোগী হওয়ায় সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ। তবে নগর পরিকল্পনা, পরিচালনা ও উন্নয়নের সঙ্গে সম্পৃক্ত অংশীজনদের মতামতের ভিত্তিতে এই আধুনিক ট্রাফিক বক্স বাস্তবায়ন করা হলে তা অধিক টেকসই হবে বলে আশা করা যায়।” বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) সভাপতি নগর পরিকল্পনাবিদ আদিল মুহাম্মদ খান অনলাইন সংবাদমাধ্যম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, “এটা দেখে ভালো লাগল, ফুটপাতে কোনো প্রতিবন্ধকতা তৈরি না করে পুলিশ বক্স বানানো হয়েছে। সড়কে দায়িত্বে থাকা ট্রাফিক পুলিশসহ অন্য সদস্যরা এর দ্বারা উপকৃত হবেন। যেহেতু টয়লেটসহ বিশ্রাম নেওয়া ও অন্যান্য সুযোগ রাখা হয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “সব আধুনিক পুলিশ বক্স সুবিধামতো জায়গায় এবং আকারের মধ্যে করলে আরও বেশি কার্যকর ও টেকসই হবে। এ ক্ষেত্রে কাছের কোনো সরকারি ভবনের কিছু জায়গা ভাড়া নিয়েও করতে পারে। আমাদের মূল উদ্দেশ্য থাকতে হবে ফুটপাত বা সড়কে যাতে কোনো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না হয়, পুলিশ সদস্যদের দায়িত্ব পালন যেন সহজ হয়। বিশেষ করে নারী পুলিশ সস্যদের সুবিধার কথা চিন্তা করতে হবে।” এর আগে গত ১ ফেব্রুয়ারি রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ৪৯তম প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে “সুধী সমাবেশ ও আলোচনা সভায়” ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে আওয়াতাধীন এলাকায় আধুনিক পুলিশ বক্স করে দেওয়ার ঘোষণা দেন ডিএনসিসির মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, “ডিএনসিসি এলাকায় যে পুলিশ বক্সগুলো করা হয়েছে, এগুলো সড়কের ওপর পথচারীদের চলাচলে অসুবিধার সৃষ্টি করে। আমি অনুরোধ করব আপনাদের নিয়ে আমরা যৌথভাবে পুলিশ বক্স করে দেব। প্রতিটি পুলিশ বক্সে টয়লেট, পানি ও বসার জন্য ব্যবস্থা করা হবে।” আধুনিক পুলিশ বক্স নির্মাণ হলে সড়কে পুলিশ সদস্যরা নির্বিঘ্নে তাদের দায়িত্ব পালন করতে পারবে জানিয়েছে ডিএমপি ট্রাফিক বিভাগ। এ ক্ষেত্রে বিভিন্ন সড়কের ট্রাফিক চাপ, দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের সংখ্যা ইত্যাদি বিবেচনা ও ট্রাফিক বিভাগের সঙ্গে আলোচনা ও সমন্বয় করে বক্স নির্মাণের আহ্বান জানান তারা।
Published on: 2024-02-13 05:12:45.16147 +0100 CET

------------ Previous News ------------