ঢাকাট্রিবিউন
কাদের: তারেক রহমান নেতৃত্বে থাকতে বিএনপি সঠিক পথে আসবে না

কাদের: তারেক রহমান নেতৃত্বে থাকতে বিএনপি সঠিক পথে আসবে না

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপির অভিশাপ দণ্ডিত পলাতক তারেক রহমান। সে যতদিন বিএনপির নেতৃত্বে থাকবে ততদিন বিএনপি সঠিক পথে আসবে না।  দলটি ভুলের চোরাবালিতেই আটকে থাকবে। বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর দিবস পালনের প্রস্তুতি ও খুলনা বিভাগীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি। ওবায়দুল কাদের বলেন, “লন্ডন থেকে যার হুকুমে বিএনপি চলে তার ফ্রি স্টাইল নেতৃত্ব এখন বিএনপি নেতাদের মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে। তারা বুঝতে শুরু করেছে -তারেক রহমান যতদিন নেতৃত্বে আছে ততদিন বিএনপি ভুলের চোরাবালিতে আটকে আছে। এখান থেকে তারা আর বের হতে পারবে না।” আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, “রাজনীতি করবে রিমোট কন্ট্রোলে, এটা কি হয়! সাহস থাকলে দেশে আসুন, রাজনীতি করুন। জেলে যাওয়ার সাহস রাখুন। লন্ডন থেকে ডাকে আর কেউ সাড়া দিক জনগণ সাড়া দেবে না। আজকে বিএনপি নেতারাও এই আন্দোলনের ডাককে ভুয়া বলে। এই বিএনপি আন্দোলনে ব্যর্থ, নির্বাচন ঠেকাতে ব্যর্থ। ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দিয়েও ব্যর্থ। বিএনপি নেতাদের শোবার ঘরে, রান্নাঘরে ভারতীয় পণ্য। তথাকথিত এই ডাক ভাওতাবাজি। এই ভাঁওতাবাজির অবসান হয়েছে। আজকে ব্যর্থ হয়ে বিএনপি দিশেহারা।” ওবায়দুল কাদের বলেন, “বাংলাদেশে আওয়ামী লীগই একমাত্র দল যারা দলের অভ্যন্তরে গণতন্ত্রের চর্চা করে। বিএনপির নিজেদের মধ্যে গণতন্ত্রের চর্চা নেই। যাদের নিজের ঘরেই গণতন্ত্র নেই তারা দেশের গণতন্ত্র নিয়ে কথা বলে কোন মুখে? ৭৫ এর নৃশংসতম ঘটনা ঘটিয়েছে গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় হন্তারক তারা। গণতন্ত্রের হত্যাকারীরা গণতন্ত্রের নামে মায়া কান্না করে। শুনেও হাসি পায় -বিএনপি এখন গণতন্ত্রের কথা বলে “ “বিএনপির ৮০ ভাগ নেতাকর্মী নির্যাতনের শিকার” এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী বলেন, “মির্জা ফখরুল কথায় কথায় চোখের জল ফেলেন। ৮০% নেতাকর্মী নাকি নির্যাতিত ও জেলে বন্দি। বলেন কোন কারাগারে তারা বন্দি আছে? আমির খসরু, মির্জা আব্বাস সবাই তো একে একে বাইরে। তালিকাটা প্রকাশ করুন। আর মিথ্যাচার করে জাতিকে বিভ্রান্ত করবেন না।” “বিএনপিপন্থি মুক্তিযোদ্ধারা ফ্রিডম ফাইটার বাই অ্যাকসিডেন্ট”, মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, “এরা ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা। আজ ইতিহাসের সত্যকে জানতে হবে। ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবসে তারা মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশ করে গণহত্যা নিয়ে কোনো কথা বলেনি। আজকে তারা এখনও স্বাধীনতার ঘোষক নিয়ে বিতর্ক চালিয়ে যাচ্ছে। স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়ার মেন্ডেট জনগণ থেকে পেয়েছিলেন শুধু বঙ্গবন্ধু। সত্তুরের নির্বাচনে একাত্তরের স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়ার বৈধ ম্যান্ডেট কেবল বঙ্গবন্ধুই পেয়েছিলেন। কাজেই স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়ার অধিকার অন্য কারো ছিল না।” তিনি বলেন, ‘১৭ এপ্রিল বিএনপিসহ বড় বড় দলগুলোর কোনো অনুষ্ঠানমালা আছে এমনটা জানা নেই। আমরা তা পালন করবো। এটা বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্মের চেতনা। বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্মের চেতনাকে আওয়ামী লীগ ধারণ করবে।” আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরুল্লাহর সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, আফম বাহাউদ্দিন নাছিমসহ কেন্দ্রীয় ও খুলনা বিভাগের নেতারা। এর আগে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৪তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভায় যোগদান দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক উপ কমিটি আয়োজিত এই সভায় তিনি মফস্বলের হাসপাতালগুলোর মান উন্নত করার ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, “দেশের মফস্বলের কোনো কোনো হাসপাতাল দেখে মনে হয় যেন আস্তাবল। হাসপাতাল যেন আস্তাবল না হয়। ডাক্তার আছে, ওষুধ নেই। আইসিইউ- এর মতো জরুরি বিষয়টি উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত থাকা দরকার।” সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, “সব মন্ত্রণালয়ের মধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে গুরুত্ব দিতে হবে। পদ্মার ওপারে একটি আধুনিক ও বড় হাসপাতাল করার প্রস্তাব আছে। ক্যান্সার, কিডনিসহ কিছু কিছু জটিল রোগের জন্য বাইরে যেতে হয়। স্বাস্থ্য খাতে দগদগে অবস্থা করোনা মহামারিতে দেখেছি। মূল জায়গায় দায়িত্বপ্রাপ্তরা যদি সৎ হোন, দায়িত্ববোধ থাকে তাহলে অনেক কিছু করা যায়।” উপ-কমিটির চেয়ারম্যান আফম রুহুল হকের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডাক্তার রোকেয়া সুলতানাসহ উপ কমিটির সদস্যরা। এ সময় দেশের পাঁচটি হাসপাতালে উপকমিটির পক্ষ থেকে হুইল চেয়ার বিতরণ করা হয়।
Published on: 2024-04-04 11:02:24.051516 +0200 CEST