ইত্তেফাক
দেশে এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট ২১ হাজার ছাড়িয়েছে

দেশে এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট ২১ হাজার ছাড়িয়েছে

*ব্যাংকিং সম্পর্কে মানুষের গতানুগতিক ধারণাই পালটে দিয়েছে এজেন্ট ব্যাংকিং ধারণা। এর মাধ্যমে গ্রাহক কার্যদিবসের বাইরে ইচ্ছেমতো লেনদেন করতে পারেন। দেশের যেকোনো প্রান্তের গ্রাহক এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের ২৪ ঘণ্টা সেবা নিচ্ছেন। সারা দেশে ২১ হাজার আউটলেটের মাধ্যমে এই সেবা দিচ্ছে তপশিলি ৩১টি ব্যাংক। এজেন্ট ব্যাংকিং মাত্র এক দশকেই শহরের চেয়ে গ্রামাঞ্চলে মানুষের জন্য সুবিধা বয়ে এনেছে। এতে সঞ্চয়, ঋণ, রেমিট্যান্স ও বিল পরিশোধ মানুষের হাতের মুঠোয় ধরা দিয়েছে। পাশাপাশি ব্যবসা-বাণিজ্যে পিছিয়ে পড়া গ্রামীণ মানুষ অর্থনীতির মূলধারায় শামিল হয়েছে। এই সেবার মান সহজ হওয়ায় স্বল্প সময়ে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে সেবাটি।* বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, মাত্র এক দশকে ৩১টি ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং কার্যক্রম সেবা চালু করেছে। গত অক্টোবর শেষে ব্যাংকগুলোর এজেন্টের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ৫৪০টি। এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেটের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২১ হাজার ৪৪৩টি। ২০২২ সালের একই সময়ে এজেন্ট ছিল ১৪ হাজার ৮৮৩ এবং আউটলেট ছিল ২০ হাজার ৩৬৩টি। অর্থাত, এক বছরের ব্যবধানে এজেন্টের সংখ্যা বেড়েছে ৬৫৯টি এবং আউটলেট বেড়েছে ১ হাজার ১০০টি। এসব এজেন্ট ও আউটলেটের প্রায় ৮০ শতাংশই গ্রামে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, অক্টোবর পর্যন্ত এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে আমানতের হিসাবের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ কোটি ৯ লাখ ৩১ হাজার ৪৬৫। বিদায়ি বছরের একই সময়ে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে আমানত জমেছে ৩৫ হাজার ৫০ কোটি টাকা। তার আগের বছরের একই সময় পর্যন্ত এই খাতে আমানত ছিল ৩০ হাজার ৬৪৯ কোটি টাকা। অর্থাৎ, মাত্র এক বছরের ব্যবধানে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে ৪ হাজার ৪০১ কোটি টাকা আমানত বেড়েছে। শহরের মানুষের তুলনায় গ্রামের মানুষের আমানত প্রায় সাড়ে ৬ গুণ বেশি। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, আমানতের পাশাপাশি এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে ঋণও বেড়েছে। যদিও ঋণের ক্ষেত্রে এগিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক গ্রাহকেরা। তবে ক্ষুদ্র গ্রাহকদের জন্য বিশেষ সুবিধা দিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নির্দেশনা জারি করেছে। আর গত অক্টোবরে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে ৩৫ হাজার কোটি টাকা আমানতের বিপরীতে ঋণ বিতরণ করা হয়েছে ৮০৯ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ে বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ছিল ৬৭৪ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিং তথ্য পর্যালোচনায় দেখা গেছে, আমানতের দিক থেকে প্রথম পাঁচটি ব্যাংকের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে ইসলামী ব্যাংক পিএলসি। আর দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ে রয়েছে যথাক্রমে ডাচ্-বাংলা ও ব্যাংক এশিয়া। এর পরের অবস্থানে আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক ও অগ্রণী ব্যাংক। প্রবাসীদের কাছ থেকে রেমিট্যান্স সংগ্রহেও এই পাঁচ ব্যাংকের অবস্থা অপরিবর্তনীয় রয়েছে। কিন্তু আউটলেটের দিক থেকে শীর্ষে রয়েছে ডাচ্-বাংলা ব্যাংক পিএলসি। এরপর ব্যাংক এশিয়া, ইসলামী ব্যাংক, সিটি ব্যাংক ও ব্র্যাক ব্যাংক। অন্যদিকে হিসাবের দিক থেকে শীর্ষে ব্যাংক এশিয়া। এরপর ডাচ্-বাংলা ব্যাংক ও ইসলামী ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে গত অক্টোবরে আমানত বেড়ে হয়েছে ৩৫ হাজার কোটি টাকা, যা ২০১৯ সালে ছিল ৮ হাজার কোটি টাকা। চার বছরে এজেন্ট ব্যাংকিং সেবায় আমানত বেড়েছে ৪০০ শতাংশের বেশি। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, চলতি অর্থবছরের জুলাই-অক্টোবরে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ৮ হাজার ৭৯৫ কোটি টাকা রেমিট্যান্স সংগ্রহ করা হয়। এর মধ্যে অক্টোবরে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ২ হাজার ৪৮ কোটি টাকা। সেপ্টেম্বরে ১ হাজার ৬৬০ কোটি টাকা, আগস্টে ১ হাজার ৯৭৭ কোটি এবং গত জুলাই মাসে এজেন্টের মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছিল ৩ হাজার ১০৯ কোটি টাকা।
Published on: 2024-02-07 01:08:35.1094 +0100 CET

------------ Previous News ------------