বেতন বাড়ানোর দাবিতে আন্দোলনরত পোশাক শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। সকাল থেকেই পোশাক শ্রমিক সড়কে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করছেন।
বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) সকালে এ ঘটনা ঘটে। আন্দোলনের জেরে গাজীপুরের কোনাবাড়ী, জরুন, চান্দনা ও ভোগরা এলাকায় ৫০টির বেশি কারখানা বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। তবে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
কোনাবাড়ীর মতো চৌরাস্তা এবং চান্দনা এলাকায়ও থমথমে অবস্থা দেখা গেছে। মোড়ে মোড়ে পুলিশ, বিজিবি ও র্যাবের প্রচুর সদস্য দেখা গেছে। কারখানা ছুটি দিয়ে দেওয়ায় শত শত সাধারণ শ্রমিক বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন।
এদিকে, শ্রমিকদের উদ্দেশ্যে হ্যান্ডমাইকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, ‘আপনারা শান্তিপূর্ণভাবে বাড়ি ফিরে যান। কোনো ফৌজদারি অপরাধে জড়াবেন না। আপনাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে না।’
জানা যায়, গাজীপুর মহানগরীর চান্দনা এলাকায় আজ সকাল ৯টার দিকে একটি তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা বেতন বাড়ানোর দাবিতে কাজ বন্ধ রেখে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে শিল্প ও থানা-পুলিশ শ্রমিকদের বুঝিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। কিছু সময় পর নাওজোড় এলাকায় শ্রমিকেরা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে। এ সময় শ্রমিকেরা মহাসড়কে টায়ার দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেন। শ্রমিক ও পুলিশের মধ্যে তখন পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
পুলিশ জানায়, গত ২৩ অক্টোবর থেকে গাজীপুরের কোনাবাড়ীসহ বিভিন্ন এলাকায় বেতন বাড়ানোর দাবিতে বিক্ষোভ করছেন বিভিন্ন পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা। এরই ধারাবাহিকতায় আজ সকালে গাজীপুরের চান্দনা ও নাওজোড় এলাকায় সড়ক অবরোধ ও ভাঙচুর করেন শ্রমিকেরা। একপর্যায়ে তারা নাওজোড় এলাকায় ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে টায়ার জ্বালিয়ে, রাস্তার ওপর কাঠ ও বাঁশ ফেলে আগুন ধরিয়ে দিয়ে মহাসড়ক অবরোধ করেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ, র্যাব ও শিল্প পুলিশ গেলে তাদের সঙ্গে শ্রমিকদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়। এ সময় শ্রমিকেরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়ে। পুলিশ শ্রমিকদের লক্ষ্য করে কাঁদানে গ্যাসে ও রাবার বুলেট ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইমরান আহম্মেদ বলেন, ‘সকালে চান্দনা এলাকায় একটি কারখানায় শ্রমিকেরা বিক্ষোভ শুরু করলে তাদের বুঝিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়। তবে নাওজোড়সহ আশপাশের কয়েকটি কারখানার শ্রমিকেরা ভাঙচুর করেন। আগুন ধরিয়ে মহাসড়ক অবরোধ করেন।’
এর আগে গত মঙ্গলবার সরকারের মজুরি বোর্ড মালিকপক্ষের প্রস্তাবের সঙ্গে সংগতি রেখে ন্যূনতম মজুরি সাড়ে ১২ হাজার টাকা নির্ধারণ করে দেয়। তবে এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে শ্রমিকরা। পোশাক শ্রমিকদের নতুন মজুরি কাঠামো ঘোষণার পরও গতকাল বুধবার গাজীপুর-আশুলিয়া ছিল অশান্ত। বেতন কাঠামো প্রত্যাখ্যান করে মজুরি আরও বাড়ানোর দাবিতে গাজীপুরের শ্রমিকরা রাস্তায় নামলে পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় ব্যাপক সংঘাত হয়েছে। এ ঘটনায় এক নারী শ্রমিক নিহত ও অর্ধশতাধিক আহত হন।
Published on: 2023-11-09 07:45:05.379225 +0100 CET
------------ Previous News ------------