দৈনিক জনকণ্ঠ
ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় মোখা, বেরীবাঁধ না থাকায় শঙ্কিত নদী পাড়ের মানুষ

ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় মোখা, বেরীবাঁধ না থাকায় শঙ্কিত নদী পাড়ের মানুষ

ধেয়ে আসছে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’। পিরোজপুরে ৮নং বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে জেলার চরাঞ্চল ও নদীপাড়ের মানুষ। ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ মোকাবিলায় জেলার ৭টি উপজেলায় ৪০৭টি সাইক্লোন শেল্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এসব সাইক্লোন শেল্টারে প্রায় ২ লাখ লোক আশ্রয় নিতে পারবে। শুক্রবার সন্ধ্যায় আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে লোকদের নেয়ার জন্য প্রশাসন থেকে তৎপরতা চালানো হচ্ছে বলে জানা গেছে। ৭টি উপজেলায় ১টি করে ৭টি এবং জেলা সদরে একটি মোট ৮টি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। ৭টি উপজেলাতে ৬৩টি মেডিকেল টিম প্রস্তত রাখা হয়েছে। এছাড়া দুর্যোগ পরবর্তী সময়ে জরুরি ভিত্তিতে সেবা দেয়ার জন্য সিপিবির ১৭০০ সদস্য ও স্কাউট এর ৩৫০ জন সদস্য প্রস্তত রয়েছে। এদিকে বিভিন্ন উপকূল এলাকায় বেরীবাঁধ না থাকায় আতংঙ্কে উপকূলের কয়েক লাখ মানুষ। জেলার ৭টি উপজেলার বিভিন্ন উপকূলীয় এলাকায় টেকসই বেরীবাঁধ না থাকার তলিয়ে ক্ষতি হয় ফসল, মাছসহ মানুষের জীবন মাল। পিরোজপুর জেলার ৭টি উপজেলায় কঁচা, বলেশ্বর, সন্ধ্যা, কালীগঙ্গা সহ ছোট বড় নদী রয়েছে। আর এ নদীকে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠেছে লোকালয় হাট বাজার ও শিল্পকারখানা। মঠবাড়িয়ার বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, সাপলেজা, টিকিকাটা, মাঝেরচড় এলাকার বেরীবাঁধ অরক্ষিত রয়েছে। এছড়াও ইন্দুরকানী উপজেলার টগড়া ফেরীঘাট, কালাইয়া, সাঈদখালী ভান্ডারিয়া উপজেলার তেলীখালী, চরখালী ফেরীঘাট সহ আশে পাশের এলাকার বেরীবাঁধ অরক্ষিত। নাজিরপুরের শ্রিরামকাঠী এলাকা এবং সদর উপজেলার বেকুটিয়া ফেরীঘাট, মরিচাল সহ বিভিন্ন এলাকায় টেকসই বেরীবাঁধ নেই। জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ৩৪৯ কিলোমিটার বেরীবাঁধ থাকলেও তার মধ্যে ১৪৪ কিলোমিটার বেরীবাঁধ ঝঁকিপূর্ণ অরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে। এসব নদী তীরবর্তী এলাকার তিন থেকে সাড়ে তিন লাখ মানুষদের মধ্যে চড়ম আতংঙ্ক বিরাজ করছে ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ মোকাবিলায়। স্থানীয়রা জানান, ২০০৭ সালের সিডরে জেলার উপকূলীয় এলাকা, মঠবাড়িয়া, ভান্ডারিয়া, কাউখালী, নাজিরপুর, সদর উপজেলা অধিকাংশ এলাকার বেরীবাঁধ ভেঙ্গে যায়। কিছু বেরীবাঁধ মেরামত করা আবার কিছু নতুন বাঁধ করলেও উপক‚লীয় এলাকা এখনো অধিকাংশ এলাকাতেই নেই টেকসই বেরীবাঁধ। যেখানে সামান্য জোয়ারেই পানি ঢুকে প্লাবিত হয়। লাহুড়ী এলাকার আবুল কালাম হাওলাদার জানান, সিডরে এলাকার বেরীবাঁধটি পুরোপুরি ভেঙ্গে গেলেও এখনো তা মেরামত করা হয়নি। মাঝেরচর এলাকার রহিম ব্যাপারী জানান, মঠবাড়িয়ার টিকিকাটা এলাকার একটি বড় চর হলো মাঝেরচর। এখানে বেরীবাঁধ চড়ম ঝঁকিপূর্ণ। অনেক জায়গায় বেরীবাঁধ নেই বললেই চলে। ঘ‚র্ণিঝড় ‘মোখা’ আঘাত হানলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে মাঝেরচর এলাকা। ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ ও ৫ কিলোমিটার প্রস্ত এ চরটিতে প্রায় ত্রিশ হাজার লোকের বসবাস। অনেকরই ফসলি জমি ঘেরের মাছ ঘরবাড়ি ক্ষতি হবে ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’র আঘাতে। সময়ের পর সময় চলে গেলেও এখানে টেকসই বেরীবাঁধ নির্মাণ করেনি কেউ। পিরোজপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবে মওলা মো: মেহেদী হাসান বলেন মানুষের জীবন মাল রক্ষায় বেশ কিছু নতুন বেরীবাধ নির্মাণ করা হয়েছে। যেসব এলাকায় বেরীবাঁধ নেই এমন ৫টি ফোল্ডার করে আমরা পাঠিয়েছি। বরাদ্ধ পেলে ক্ষতিগ্রস্থ বাঁধ গুলোও মেরামত করা হবে। ঝূঁকিপূর্ণ বেশ কয়েকটি ভাঙন এলাকায় জিওব্যাগ রাখা আছে। এসব জিওব্যাগ ফেলে ভাঙন এলাকা রক্ষার কাজ চলমান আছে।
Published on: 2023-05-13 08:22:31.275834 +0200 CEST