দৈনিক জনকণ্ঠ
বাসায় ঢুকে কলেজছাত্রীকে কুপিয়ে হত্যা করল শিক্ষক

বাসায় ঢুকে কলেজছাত্রীকে কুপিয়ে হত্যা করল শিক্ষক

বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় বাসায় ঢুকে রাবেয়া আক্তার (২১) নামের এক কলেজছাত্রীকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে শিক্ষকের বিরুদ্ধে। রাবেয়া ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। রাবেয়াকে কোপানোর সময় বাধা দেওয়ায় এই কলেজছাত্রীর মা ও তিন বোনকে কুপিয়ে জখম করা হয়। তার মা বর্তমানে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন আছেন। সোমবার (৮ মে) রাতে গাজীপুরের সালনায় বাসায় ঢুকে রাবেয়াকে এলোপাতাড়ি কোপাতে শুরু করেন সাইদুল ইসলাম (২৫) নামের এক শিক্ষকে। বর্তমানে তিনি পলাতক রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে নিহত কলেজছাত্রীর বাবা আবদুর রউফ গাজীপুর সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। সাইদুল ইসলাম ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা থানার মহেশতারা গ্রামের ফজলুর রহমানের ছেলে। তিনি গাজীপুরের দক্ষিণ সালনা এলাকার একটি মাদ্রাসার শিক্ষক, পাশাপাশি একটি মসজিদে নামাজ পড়ান। ছুরিকাঘাতে আহতরা হলেন- রাবেয়ার মা ইনসুরেত নেছা (৫০), বোন হাবিবা (১৮), খাদিজা (১৫) ও জান্নাত (১৩)। জানা যায়, রাবেয়ার ছোট বোনকে প্রাইভেট পড়াতে গিয়ে পরিচয় ওই শিক্ষকের সঙ্গে। গত দুই বছর ধরে বিভিন্ন সময় রাবেয়াকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন সাইদুল ইসলাম। কিন্তু রাজি না হওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে যান তিনি। মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, কুমিল্লার হোমনার শ্রীমদ্দি এলাকার বাসিন্দা আবদুর রউফ সালনা বাজারে একটি শো-রুমে চাকরি করেন। সেখানেই সপরিবার বসবাস করেন। ছোট দুই মেয়েকে কোরআন শিক্ষার জন্য সাইদুল ইসলামকে হাউস টিউটর হিসেবে নিয়োগ করেন আবদুর রউফ। সাইদুল রাবেয়াকে বিয়ে করার জন্য তার পরিবারের কাছে প্রস্তাবও দিয়েছিলেন। বিয়ের প্রস্তাবে প্রত্যাখ্যাত হয়ে সাইদুল রাবেয়াকে বিভিন্নভাবে বিয়ে করার জন্য চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে সাইদুলকে বাসায় এসে পড়ানোর জন্য নিষেধ করে দেওয়া হয়। ঘটনার দিন সাইদুল সোমবার রাত সাড়ে আটটার দিকে বাসায় প্রবেশ করে রাবেয়াকে ছুরি দিয়ে মাথা, গলা, হাত ও পায়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করতে থাকেন। তার চিৎকারে মা ও দুই বোন দৌড়ে রাবেয়া আক্তারের ঘরে গিয়ে দেখেন, সাইদুল ছুরি দিয়ে তখনো রাবেয়াকে ছুরিকাঘাত করছেন। এ সময় বাধা দিলে ছুরি দিয়ে তিনি অন্যদেরও আঘাত করে পালিয়ে যান সাইদুল। গুরুতর অবস্থায় রাবেয়াকে স্থানীয় ব্যক্তিরা শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে রাতেই তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাজধানীর একটি হাসপাতালে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রাবেয়ার মা। গাজীপুর সদর থানার ওসি জিয়াউল ইসলাম বলেন, মঙ্গলবার সকালে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত রক্তাক্ত ছুরিটি উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় নিহত ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেছেন। আসামি সাইদুল ইসলামকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
Published on: 2023-05-09 17:28:25.818843 +0200 CEST