দৈনিক জনকণ্ঠ
বিশ্ব বাজারে জ্বালানির দাম কমলেও এখনি কমছে না দেশে

বিশ্ব বাজারে জ্বালানির দাম কমলেও এখনি কমছে না দেশে

বিশ্ব বাজারে জ্বালানির দামে কিছুটা স্বস্তি এসেছে। কিন্তু এখনি এ বিষয়ে কোনো সুখবর পাওয়ার সম্ভাবনা নেই দেশের বাজারে। প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক ই ইলাহী চৌধুরী বলেছেন, বিশ্ব বাজারে দাম কিছুটা কমলেও তা কতদিন পর্যন্ত থাকে এটি আমরা পর্যবেক্ষণ করবো। যদি এটি দীর্ঘমেয়াদী হয় তাহলে অবশ্যই দেশের বাজারে কমবে দাম। এর আগে না। দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিতে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির জন্য ওমানের রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি ওকিউটির সঙ্গে বার্ষিক ১ মিলিয়ন বা ১০ লাখ টন এলএনজি আমদানির চুক্তি করেছে তেল, গ্যাস ও খনিজসম্পদ কর্পোরেশন পেট্রোবাংলা। সোমবার রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত চুক্তির স্বাক্ষর অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। ড. তৌফিক ই ইলাহী চৌধুরী বলেন, জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিতে আমরা নানা ধরণের পদক্ষেপ নিচ্ছি। এরই ধারাবাহিকতায় কাতার থেকে বাড়তি এলএনজি আমদানি করা হচ্ছে। এবার ওমান থেকেও আমদানির চুক্তি হলো। এদিকে দেশীয় কূপগুলো নতুন করে খননের ওপর জোর দেয়া হচ্ছে। সব মিলিয়ে আমরা বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সংকট মোকাবেলায় বিকল্প নানা পথ তৈরির চেষ্টা করছি। সাম্প্রতিক সময়ের বিদ্যুৎ সংকটের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের বিদ্যুৎ উৎপাদনের নানা ধরণের পথ আছে। গ্যাস, কয়লা, তেল। এখন নবায়নযোগ্য জ্বালানিও যোগ হয়েছে। ভবিষ্যতে সংকট থাকবে না। এর আগে ওমান থেকে জি-টু-জি ভিত্তিতে ১০ বছর মেয়াদী অতিরিক্ত ০.২৫ থেকে ১.৫ এমটিপি (মিলিয়ন টন পার এনাম) এলএনজি আমদানির লক্ষ্যে পেট্রোবাংলা ও ওমান ট্রেডিং ইন্টারন্যাশনাল (বর্তমান নাম ওকিউ ট্রেডিং লিমিটেড-ওকিইউটি) এর সাথে ২০১৮ সালের ৬ মে এলএনজির ‘সেল এন্ড পার্চেস এগ্রিমেন্ট (এসপিএ) প্রথম চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিলো। স্বাক্ষরিত চুক্তির আলোকে ওকিইউটি বর্তমানে বছরে ১.০ এমটিপি (১৬ কার্গো) এলএনজি সরবরাহ করছে। জি-টু-জি ভিত্তিতে ওকিইউ ট্রেডিং লিমিটেড থেকে ১০ বছর মেয়াদে (২০২৬ সালে ৪ কার্গো এলএনজি, ২০২৭ থেকে ২০২৮ পর্যন্ত প্রতিবছর ১৬ কার্গো এলএনজি এবং ২০২৯ থেকে ২০৩৫ সাল পর্যন্ত প্রতিবছর ২৪ কার্গো এলএনজি (যা কম বেশি ১.৫ এমটিপিএ এলএনজি’র সমতুল্য) আমদানির লক্ষ্যে এই চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. তৌফিক ই ইলাহী চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এই এলএনজি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। আমরা দেশীয় গ্যাস অনুসন্ধানেও জোর দিয়েছি। গভীর সমুদ্রে অনুসন্ধানের পিএসসিকে হালনাগাদ করা হচ্ছে। অনুষ্ঠানে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সচিব ড. মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদারের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখে বাংলাদেশে নিযুক্ত ওমানের রাষ্ট্রদূত আব্দুল গাফ্ফার আলবুলুসি, পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার, ওকিইউটি’র নির্বাহী পরিচালক সাইদ আল মাওয়ালী। জ্বালানি বিভাগ জানায়, এই চুক্তির বাইরেও ২০১৭ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর কাতার গ্যাসের সঙ্গে ১৫ বছর মেয়াদী ১.৮ এমটিপিএ এলএনজি (বর্তমানে ২.৫ এমটিপিএ, ৪০ কার্গো এলএনজি) এবং চলতি বছরের ১ জুন কাতার এনার্জি ট্রেডিং কোম্পানি এলএলসি-এর সঙ্গে ১৫ বছর মেয়াদী দ্বিতীয় চুক্তিতে অতিরিক্ত ১.৫ এমটিপিএ এলএনজি আমদানির চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। বর্তমানে বিদ্যমান দুই চুক্তির আওতায় দেশে ৩.৫ থেকে ৪ এমটিপিএ এলএনজি আমদানি করা হচ্ছে।
Published on: 2023-06-19 18:33:39.40153 +0200 CEST