আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, স্বাধীন বিচারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় বিএনপি বারবার প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান বাংলাদেশে বিচারহীনতার অপসংস্কৃতি চালু করেছিল।
শনিবার (৫ আগস্ট) ওবায়দুল কাদের এক বিবৃতিতে দেশের বিচার বিভাগ নিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ঔদ্ধত্যপূর্ণ ও সংবিধানবিরোধী বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে একথা বলেন।
তিনি বলেন, বিচার বিভাগকে তারা দলীয় আঙ্গিনায় রূপান্তরিত করেছিল। হাওয়া ভবন থেকে নিয়ন্ত্রিত হতো সব কিছু। বিএনপির আমলে তারা প্রধান বিচারপতির দরজায় লাথি পর্যন্ত মেরেছে। ল’ ডিগ্রি নেই এমন লোককে তারা হাইকোর্টের বিচারক বানিয়েছিল এবং প্রমাণিত হওয়ার পর সে পদত্যাগে বাধ্য হয়েছিল। যুদ্ধাপরাধীর পুত্রকে জামিন দিতে দেশের আইন ও কোর্টের বিধি লঙ্ঘন করে হাইকোর্টের একজন বিচারক রাতের বেলা তার ঘরের মধ্যে কোর্ট বসিয়েছিল।
বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের এমপি বলেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ তাদের নেতারা দেশের স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা নিয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে নেতিবাচক মন্তব্য করছেন। অথচ বিএনপির দুর্নীতিপরায়ণ শীর্ষ নেতৃত্বের অপরাধ দীর্ঘ বৈচারিক প্রক্রিয়া এবং সাক্ষ্য প্রমাণের মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হওয়ায় বিজ্ঞ আদালতের রায়ে তাদের শাস্তি হয়েছে। একুশে আগস্ট নারকীয় গ্রেনেড হামলার মাস্টারমাইন্ড, দুর্নীতির বরপুত্র দন্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি তারেক রহমানের দুর্নীতি ও অর্থপাচারের বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআইয়ের প্রতিনিধি এসে সাক্ষ্য দিয়েছে।
তিনি বলেন, জিয়া পরিবারের পাচারকৃত ৪০ কোটি টাকা বিদেশ থেকে ফেরত আনা হয়েছে। এতিমের টাকা আত্মসাতের দায়ে বেগম খালেদা জিয়াও সাক্ষ্য প্রমাণের মধ্য দিয়ে এবং প্রচলিত আইন অনুযায়ী, দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় বিজ্ঞ আদালতের রায়ে সাজাপ্রাপ্ত হয়েছেন। সাক্ষ্য প্রমাণ এবং যথাযথ আইনিপ্রক্রিয়া অনুসরণ করেই তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা পরিচালিত হয়েছে।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি নেতাদের নামে পরিচালিত এসব মামলায় সরকারের কোনো যোগসূত্র নেই। ওয়ান-ইলেভেনের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় এসব মামলা দায়ের হয়েছে। এসব মামলায় বর্তমান সরকার কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ করেনি।
তিনি বলেন, দেশের সংবিধান, বিচারব্যবস্থা, নির্বাচন, জনমত, গণতান্ত্রিক রীতিনীতি কোনো কিছুর প্রতি জন্মলগ্ন থেকেই বিএনপির কোনো প্রকার আস্থা নেই। তাই তারা গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানসমূহের বিরুদ্ধে বিষেদগার করে। স্বাধীন বিচারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় বিএনপি বারবার প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান বাংলাদেশে বিচারহীনতার অপসংস্কৃতি চালু করেছিল। দলীয় বিচারপতি নিয়োগের পথ সুগম করার জন্য সংবিধান লঙ্ঘন করে ৪ জন বিচারপতিকে জোরপূর্বক বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠিয়েছিল জিয়াউর রহমান। তারই পদাঙ্ক অনুসরণ করে বিচার বিভাগকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছে খালেদা জিয়া।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় আওয়ামী লীগ সরকার বিচার বিভাগের স্বাধীনতাকে সুসংহত করেছে। দেশের বিচার বিভাগকে নির্বাহী বিভাগ থেকে আলাদা করে স্বাধীন বিচারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিচারহীনতার অপসংস্কৃতির পরিবর্তে দেশে আইনের শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে। দেশের সংবিধান, বিচারব্যবস্থা নিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের দেয়া বক্তব্য দূরভিসন্ধিমূলক।
সূত্র: বাসস
Published on: 2023-08-05 07:24:01.73426 +0200 CEST
------------ Previous News ------------