যায়যায়দিন
ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে পোশাক শ্রমিকদের বিক্ষোভ

ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে পোশাক শ্রমিকদের বিক্ষোভ

বিএনপির ডাকা অবরোধের প্রথম দিন মঙ্গলবার সকালে অবরোধকারীদের খুব একটা দেখা না গেলেও বেতন বৃদ্ধির দাবিতে বিভিন্ন গার্মেন্টস কারখানার শ্রমিকদের সড়ক-মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে দেখা গেছে। এদিন সকালে বিভিন্ন সড়কে লোকাল গাড়ি চলাচল করলেও দূরপাল্লার কোনো গাড়ি দেখা যায়নি। মঙ্গলবার সকাল ৯টা পর্যন্ত দূরপাল্লার কোন যানবাহন চলাচল করতে দেখা যায়নি। মোড়ে মোড়ে পুলিশের সতর্ক অবস্থান লক্ষ্য করা গেছে। গাজীপুর মহানগরের বাসন থানার ওসি মোঃ আবু সিদ্দিক জানান, মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) অবরোধের প্রথম দিন সকালে গাজীপুর সিটি এলাকায় বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ছাড়া তেমন কোন বড় ঘটনা ঘটেনি। সকালে চান্দনা চৌরাস্তার দক্ষিণ ও উত্তর দিকে কয়েকটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা বেতন বৃদ্ধির দাবিতে বিক্ষোভ ও ঢাকা মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধের চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের সরিয়ে দেয়। সকাল ১১টা পর্যন্ত কোন বিশৃঙ্খলা বা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেন। গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপ- কমিশনার আবু তোরাব মোঃ শামসুর রহমান জানান, বিএনপির ডাকা অবরোধের প্রথম দিন মঙ্গলবার সকাল ১১ টা পর্যন্ত কোথাও কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। গাজীপুরের চন্দনা চৌরাস্তা গাড়ির জন্য অপেক্ষারত ময়মনসিংহের আব্দুল মতিন দুলাল জানান, মঙ্গলবার সকাল ৯ টা থেকে বাসের জন্য অপেক্ষা করছি কিন্তু কোন ময়মনসিংহ যাচ্ছে না। শেষে ১১ টায় অতিরিক্ত ভাড়ায় একটি সিএনজি চালিত অটো রিক্সা ভাড়া করি। ঢাকা-ময়মনসিংহ ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক ও আঞ্চলিক মহাসড়কে যানবাহনের সংখ্যা অনেক কম থাকায় যাত্রীরা তাদের গন্তব্যে পৌঁছাতে ভোগান্তির শিকার হন। পরে তারা অতিরিক্ত ভাড়ায় ব্যাটারি চালিত অটো,্ এবং সিএনজি চালিত অটোসহ ছোট ছোট রিকশা ভ্যানে করে গন্তব্যে যান। তবে মঙ্গলবার সকাল হওয়ার সাথে সাথেই ঢাকা-ময়নসিংহ মহাসড়কে গাজীপুরের শ্রীপুর মাওনা চৌরাস্তার পল্লী বিদ্যুত মোড় এলাকায় মহাসড়কে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেছে অবরোধ সমর্থকারীরা। এছাড়াও ভোরে সালনা এলাকাতেও টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেছে তারা। এছাড়া সকাল সাড়ে আটটার দিকে গাজীপুর শহরের শিববাড়ি, ভাওয়াল রাজবাড়ি, চান্দনা চৌরাস্তা, ভোগড়া বাইপাসসহ আশপাশের এলাকায় ঘুরে বিএনপি নেতা কর্মীদের দেখা না গেলেও বেতন বৃদ্ধির দাবিতে গাজীপুর মহানগরের তেলী পাড়া, দীঘির চালা ও আউটপাড়া এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে নেমে অবস্থান নেয় এবং বিক্ষোভ ও অবরোধ শুরু করে। এক ঘন্টা পর পুলিশ গিয়ে টিয়ারসেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুঁড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। রাজধানী ঢাকার সাথে ট্রেন যোগাযোগ ছিল স্বাভাবিক। জয়দেবপুর রেলজংশনের স্টেশন মাস্টার রেজাউল করিম জানান, উত্তরাঞ্চল থেকে যথা সময়ে ট্রেন সমূহ ছেড়ে এসেছে এবং গাজীপুর থেকে ঢাকার দিকে যথা সময়ে ট্রেন ছেড়ে গেছে। গাজীপুর সদর উপজেলার ভাওয়াল মির্জাপুর কলেজের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আরিফ হোসেন জানান, কলেজে যাওয়ার জন্য গাজীপুরের চন্দনা চৌরাস্তা এলাকায় গাড়ির জন্য অবস্থান করছি। কিন্তু মহাসড়কে কোন গাড়ি না থাকায় শেষে ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা এর সন্ধান করতে থাকি। কিছুক্ষণ পরেই অধরে তেলিপাড়া এলাকায় কয়েকটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা রাস্তায় নেমে বেতন বৃদ্ধির দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করে এতে অটো রিক্সাও চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পুলিশ প্রায় আধাঘন্টা চেষ্টার পরও শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ না ছাড়লে টিয়ার সেল নিক্ষেপ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এরপর ব্যাটারি চালিত অটো রিক্সা চড়ে ভেঙ্গে ভেঙ্গে সালনা এবং মাস্টার বাড়ি হয়ে গন্তব্যে চলে যাই। আজকে অবরোধ তাই, নির্দিস্ট সময়ের আগেই অফিসের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছি। সকালে রাস্তায় তুলনামুলক যানবাহন থাকায় অফিসে যেতে তেমন কোন সমস্যা হবে না। অবরোধ চলাকালে ঢাকা-ময়মনসিংহ ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বিপুল সংখ্যক আইনশৃংখলা বাহিনীর উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। এছাড়া কালিয়াকৈরের চন্দ্রা, শ্রীপুরের মাওনা ও গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গীতেও সীমিত সংখ্যক যানবাহন চলাচল করার খবর পাওয়া গেছে। যাযাদি/ এস
Published on: 2023-10-31 07:02:54.968316 +0100 CET

------------ Previous News ------------