তত্ত্বাবধায় মরে গেছে আদালতের রায়ে, কারো ফরমায়েশে নির্বাচন হবেনা : কাদের

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দেশে নির্বাচন হবে নির্বাচনের নিয়মে। কারো ফরমায়েশে বাংলাদেশে নির্বাচন হবেনা। তত্ত্বাবধায়ক মরে গেছে আদালতের আদেশে। ওটাকে আর জীবিত করে লাভ নেই। তাঁর প্রশ্ন দুনিয়ার সব দেশে তত্ত্বাবধায়ক ছাড়া ইলেকেশন হয়। বাংলাদেশে কেন ইউরোপ-আমেরিকার নেতারা আসে? রবিবার দুপুরে নিজ নির্বাচনী এলাকা নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বসুরহাট পৌরসভা মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত শান্তি সমাবেশে ওবায়দুল কাদের আরো বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি দলকে আমি জিজ্ঞাসা করি আপনাদের কোন দেশে তত্ত্বাবধায়কে ভোট হয়েছে। ইউরোপও বলতে পারেনি, আমেরিকা বলতে পারেনি। অবাধ, সুষ্ঠু, বিশ্বাসযোগ্য ভোট করব এ প্রতিশ্রুতি আমরা দিতে পারি। গণতান্ত্রিক বিশ্বকে বলব পর্যবেক্ষক দিয়ে এই ভোট পর্যবেক্ষণ করুন। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের প্রসঙ্গ টেনে ওবায়দুল কাদের বলেন, তিনি সজ্জন, কিন্ত কথা বার্তায় বড় বেসামাল। মির্জা ফখরুল কলেজের শিক্ষক, এতো মিথ্যা কথা বলতে পারে, এতো গালিগালাজ করতে পারে। তার মুখে এতো বিষ ভাবতেও অবাক লাগে। দেখতে মনে একজন পাকা সাচ্চা ভদ্রলোক। কিন্ত কথা যখন বলে তখন মনে হয় একজন প্যাথলজিকাল লায়ার। এই মিথ্যাবাদী এখন বলে তত্ত্বাবধায়ক আসলে নাকি আওয়ামী লীগ ১০টি আসনও পাবেনা। ২০০৮ সালে এই ফখরুল এবং তার নেত্রী বলেছিল আওয়ামী লীগকে মাত্র ৩০টি আসন দিয়েছি। কিন্ত নির্বাচনে দেখা গেল ৩০টি আসন বিএনপিই পেয়েছে। তারা যেটা আওয়ামী লীগকে দিতে চেয়েছে আল্লার হুকুম সে ৩০টি তাদের ভাগ্যে জুটেছে। এবার যে কি হবে জানিনা। এবার আরো বেপরোয়া বেসামাল। মির্জা ফখরুল লন্ডনের হুকুমে চলে মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, যে দন্ডিত আসামি অর্থপাচার করে, মুচলেকা দিয়ে পালিয়ে গেছে। যে দলের নেতা দন্ডিত আসামি, সেই দল এই দেশের মানুষ সমর্থন করতে পারেনা। আওয়ামী লীগ সাধারন সম্পাদক বলেন, বিএনপি আরেকবার ক্ষমতায় গেলে এরা আবারও হাওয়া ভবন করবে। গণতন্ত্র, মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতার আদর্শ, দেশের উন্নয়ন গিলে খাবে, সুযোগ পেলে বাংলাদেশ গিলে খাবে। এই দলের কাছে গণতন্ত্র, মুক্তিযুদ্ধ, আইনের শাসন, দেশের নিরাপত্তা, নিরপেক্ষ নির্বাচন ব্যবস্থা নিরাপদ নয়। বিএনপি মানি ভোট চুরি, ভোট জালিয়াতি, বিএনপি মানি ভুয়া ভোটার তালিকা। বিএনপিকে নালিশ পার্টি মন্তব্য করে কাদের বলেন, এখন দেখছে নালিশ করতে করতে আর কাজ হচ্ছেনা। এখন বিএনপি খাই খাই পার্টি। ক্ষমতার জন্য পাগল কয়ে গেছে, বেপরোয়া হয়ে গেছে। তাদের লক্ষ্য একটাই শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে বিদায় করা। মন্ত্রী আরও বলেন, বিএনপি বিদেশীর কাছে নালিশ করতে করতে কিছুতেই কাজ হচ্ছেনা। ইউরোপ আমেরিকা এসেছে। বিএনপি ভেবেছে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে এই সরকারকে বিদায় দিবে। পাইলেন কি ঘোড়ার ডিম। ইউরোপ-আমেরিকা কি দিল। এখন বিএনপি নেতাদের মুখ শুকিয়ে গেছে। নেতারা মুখে বলেনা,পত্রিকায় গালিগালাজ করে। সরকারের উন্নয়ন নিয়ে বিএনপি নেতাদের কাদের বলেন, বিএনপি বুঝতে পেরেছে ভোট দিলে এখন আওয়ামী লীগই জিতবে। বাংলাদেশের ৭০ পার্সেন্ট লোক শেখ হাসিনাকে ভোট দেওয়ার জন্য উদগ্রীব হয়ে আছে। আমি যা বললাম বাস্তবে সেটা দিনক্ষণ লিখে রাখুন। কিছুতো দেখেননা। উন্নয়ন দেখেনান। নিজেরাতো কিছু করতে পারেননা। শেখ হাসিনা করেছে পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল। দেখলে বিএনপি নেতাদের বুকের জ্বালা বাড়ে। দলীয় নেতাকর্মিদের উদ্দেশ ওবায়দুল কাদের বলেন, নিজেদের আচরণ সংযত করুন। শেখ হাসিনা উন্নয়ন করেছে আপনারা ভালো আচরণ করুন মানুষের সাথে। ক্ষমতার দাপট দেখাবেন না। ক্ষমতা চিরদিন থাকেনা। আমরা শান্তি চাই, শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চাই। তবে যে আগুন নিয়ে আসবে সে হাত গুটিয়ে দেবেন। যে হাত ভাংচুর করতে আসবে সে হাত আমরা ভেঙ্গে দিব। আমরা আক্রমণকারী হবোনা। আক্রান্ত হলে হলে পাল্টা জবাব দিবো। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, আগামী ২৭ জুলাই ঢাকাতে বিএনপির মহাসমাবেশ এ নিয়ে আমাদের কোন প্রতিক্রিয়া নেই। আমাদের নির্বাচনের সিডিউল ঘোষণা পর্যন্ত আমাদের কর্মসূচি শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ চলমান থাকবে। কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল কাদের মির্জার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বাদলের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ফেনী ২ আসনের সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ এ এইচ এম খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিম, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহাব উদ্দিন। এর আগে, বেলা সোয়া ১১টার দিকে বসুরহাট পৌরসভায় বাস্তবায়িত নব আধুনিকায়ন বসুরহাট বাসস্ট্যান্ড ও ৫৩৫টি স্যোলার বাতি স্থাপন প্রকল্পের উদ্বোধন করেন সেতুমন্ত্রী। যাযাদি/এসএস
Published on: 2023-07-23 15:11:19.903895 +0200 CEST