সমকাল
দুর্ধর্ষ ব্যাংক লুটের পর ভরদুপুরে ব্রাশফায়ার

দুর্ধর্ষ ব্যাংক লুটের পর ভরদুপুরে ব্রাশফায়ার

মাত্র ১৬ ঘণ্টা আগেই ব্যাংক লুটের জন্য বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র বন্ধ করে দিয়ে বান্দরবানের রুমা অন্ধকার করেছিল সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। সেই ঘটনার রেশ না কাটতেই থানচির ডাকাতিতে আলো-ঝলমল দুপুরকেই বেছে নিল পাহাড়ের সশস্ত্র গোষ্ঠী কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ)। প্রকাশ্যে থানচিতে গতকাল বুধবার কৃষি ও সোনালী ব্যাংকে দুর্ধর্ষ ডাকাতি হয়েছে। থানচি সদরের শাহজাহানপুরের দিক থেকে তিনটি চাঁদের গাড়িতে সন্ত্রাসীরা গুলি করতে করতে বাজারে ঢোকে। এর পর থানচি উচ্চ বিদ্যালয়-সংলগ্ন সোনালী ও কৃষি ব্যাংকের শাখায় ঢুকে টাকা নিয়ে যায় তারা। সোনালী ব্যাংক থেকে ১৫ লাখ ও কৃষি ব্যাংক থেকে ২ লাখ ৪৫ হাজার টাকা তারা লুট করে। কমান্ডো কায়দায় অপারেশন শেষে সশস্ত্র দলটি থানচি বাজারে প্রকাশ্যে ব্রাশফায়ার চালিয়ে ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করে। তিনটি গাড়িতে চাঁদাপাড়া এলাকার সড়কের দিকে তারা চলে যায়। ১৬ ঘণ্টার ব্যবধানে দুটি উপজেলার দুই সরকারি ব্যাংকের তিনটি শাখায় ডাকাতির ঘটনায় পুরো বান্দরবান জেলায় আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। জেলার সোনালী ব্যাংকের তিনটি শাখায় আজ লেনদেন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রথমে গত মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে রুমা শহরের সোনালী ব্যাংকে হানা দেয় সশস্ত্র ডাকাত দল। এ সময় ব্যাংক কর্মকর্তা, নিরাপত্তারক্ষীসহ অন্তত ২০ জনকে মারধর করা হয়। অপহরণ করা হয় ওই শাখার ব্যবস্থাপক নেজাম উদ্দিনকে। লুট করা হয় পুলিশ-আনসারের ১৪ অস্ত্র ও ৩২০ রাউন্ড গুলি। গতকাল রাত ১টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত শাখা ব্যবস্থাপকের খোঁজ মেলেনি। তাঁকে উদ্ধারে অভিযান চালাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। আজ থেকে বান্দরবানে শুরু হবে যৌথ অপারেশন। নজিরবিহীন এই ধারাবাহিক ডাকাতিতে পাহাড়ের সশস্ত্র গোষ্ঠী কেএনএফ বা বম পার্টি জড়িত বলে স্থানীয় বাসিন্দা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, চলচ্চিত্রে যেভাবে প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে ব্যাংক লুটের দৃশ্য দেখা যায়; বান্দরবানের ঘটনা একই ধরনের। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বান্দরবানে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। সেখানে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। রুমা ও থানচির প্রধান সড়কেও ছিল বাড়তি নিরাপত্তা। তবে রুমার ঘটনার পর জেলাজুড়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রয়োজনীয় সতর্কতা ছিল কিনা– এ প্রশ্নও উঠেছে। আতঙ্কে এলাকার লোকজন খুব প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছে না। প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ানে ভীতিকর পরিস্থিতি রুমায় একটি দোতলা ভবনে সোনালী ব্যাংক। নিচতলায় ব্যাংকটির ব্যবস্থাপক ছাড়াও অন্য সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তাদের আবাসস্থল। সোনালী ব্যাংক ভবনের ১২ থেকে ১৫ গজ দূরে একটি মসজিদ। মঙ্গলবার রাতের ঘটনা বর্ণনা করতে গিয়ে রুমার সোনালী ব্যাংকের মসজিদের ইমাম নুরুল ইসলাম বলেন, ‘২৪ বছর ধরে এ মসজিদে ইমামতি করছি। জীবনে এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হইনি। মঙ্গলবার রাত সোয়া ৮টা। নামাজের জন্য মসজিদে এসেছিলেন ১৬ থেকে ১৮ জন। তখন নামাজের এক রাকাত বাকি। এমন সময় খাকি পোশাক পরিহিত অস্ত্র হাতে চারজন লোক জুতা পায়ে মসজিদে ঢুকে পড়ে। সামনের সারিতে এসে নামাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত সন্ত্রাসীরা অপেক্ষায় ছিল। নামাজ শেষ হওয়ার পর সবাইকে জিম্মি করে সবার কাছ থেকে মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে মারধর করে। তারা সোনালী ব্যাংক ব্যবস্থাপকের খোঁজ করে।’ রুমার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘অস্ত্রধারীদের একজন আমাকে অস্ত্রের বাঁট দিয়ে বুকে আঘাত করে। কিল-ঘুসিও দেয়। এর পর জিজ্ঞেস করে– তুই কে? আমি কৃষি কর্মকর্তা বলি। সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপক নেজাম উদ্দিনও নিজেকে কৃষি কর্মকর্তার পরিচয় দেন। তবে যখন তারা নিশ্চিত হয়– তিনি ব্যাংকের ব্যবস্থাপক, তখন কলার ধরে বাইরে বের করে নিয়ে আসে। বাইরে দেখতে পাই, শতাধিক অস্ত্রধারী আশপাশে দাঁড়িয়ে আছে। পরে বাজার রোডের রাস্তা দিয়ে একজনকে আসতে দেখি। কাছে আসার পর দেখি, সোনালী ব্যাংকের ক্যাশিয়ার উথোয়াইচিং মারমাকে ধরে নিয়ে আসছে সন্ত্রাসীরা।’ ঘটনার বর্ণনা দিয়ে উথোয়াইচিং বলেন, ডাকাতরা চলে যাওয়ার পর সেনাসদস্য ও পুলিশ আসে। পরে ব্যাংকে ঢুকে দেখি, কম্পিউটারসহ সবকিছু ভাঙা। কাগজপত্র ছিঁড়ে ফেলেছে। ড্রয়ার খুলে খরচের যে টাকা ছিল, সব নিয়ে গেছে।’ সামনে পাহাড়িদের বর্ষবরণ উৎসব এবং ঈদের জন্য বেতন-ভাতা দেওয়ার জন্য ব্যাংকে মোট ১ কোটি ৫৯ লাখ টাকা ছিল। পরিচয় লুকাতে মুখে ছিল কালো রং রুমা বাজারে ঢোকার প্রায় এক কিলোমিটার আগেই সোনালী ব্যাংকের কার্যালয়। এর উল্টো পাশে উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্স। ব্যাংক থেকে থানার দূরত্ব প্রায় দুই কিলোমিটার; আর রুমা বাজারে সেনাবাহিনী ও বিজিবির ক্যাম্পও রয়েছে। সোনালী ব্যাংকের ওই শাখা থেকে আধা কিলোমিটার দূরত্বে বম সম্প্রদায়ের একটি পাড়া। প্রত্যক্ষদর্শী নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশের এক সদস্য বলেন, ‘অতিরিক্ত নিরাপত্তার জন্য সোনালী ব্যাংকের দ্বিতীয় তলায় আমাদের থাকার ব্যবস্থা রাখা হয়। ঘটনার দিন রাতে চিৎকার শুনে নিচে নামার চেষ্টা করি। এ সময় অতর্কিতে হামলা চালিয়ে আমাকে জিম্মি করে রাখে। কক্ষে থাকা সবাইকে জিম্মি করে অস্ত্র ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। এর পর মারধর করে সেখানে আটকে রাখে। প্রত্যক্ষদর্শী, ভুক্তভোগী ও ঘটনার কাছাকাছি এলাকার লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সোনালী ব্যাংক দোতলা ভবনের প্রথম তলার সিঁড়ির দু’পাশে কয়েকটি কক্ষ আছে। এসব কক্ষে কৃষি কর্মকর্তা, মাধ্যমিক ও সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা, প্রকৌশল শাখার প্রকৌশলী, যুব উন্নয়ন, পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক, পানি উন্নয়ন বোর্ড, আনসার কর্মকর্তা ও নির্বাচন কর্মকর্তারা বাস করেন। মঙ্গলবার রাতে ঘটনার সময় রুমা সড়কে উপজেলা প্রশাসনের সামনে প্রধান সড়কটির দু’পাশ আটকে রাখে অস্ত্রধারীরা। ওই সময় কয়েকজন অস্ত্রধারী সোনালী ব্যাংক-সংলগ্ন মসজিদের ভেতরে ঢুকে মুসল্লিদের জিম্মি করে। কিছু অস্ত্রধারী পাশের মসজিদ থেকে প্রায় ১০ গজ দূরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবনের সামনে আনসার সদস্যদের ব্যারাকে ঢুকে তাদের জিম্মি করে। ওই সময় আটজন আনসার সদস্য ছিলেন। আনসারের চার সদস্যকে মারধর করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে চারটি শটগান ও প্রায় ২০০ রাউন্ড গুলি লুট করে। একই সময়ে উপজেলা প্রশাসনের ভবনের ভেতরে ও বাইরে থাকার কর্মচারীদেরও আটকে রাখা হয়। এ সময়ে পাহাড়ের চারদিকে পাহারায় ছিল বিপুলসংখ্যক অস্ত্রধারী। মুখ বাঁধা না থাকলেও যাতে তাদের সহজে চেনা না যায়, সে জন্য মুখে কালো রং মাখা ছিল। সবার কাছে ছিল ভারী ও হালকা অস্ত্র। সোনালী ব্যাংকের পেছনে পাহাড় ও জঙ্গল। এ কারণে পাহাড় ও জঙ্গল দিয়ে এসে সহজেই অপারেশন করা গেছে। প্রায় এক ঘণ্টা তাণ্ডব চালিয়েছে তারা। সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপক নেজাম উদ্দিনকে অপহরণ করে পাহাড় ও ঢালু রাস্তা দিয়ে বেথেলপাড়া হয়ে গভীর জঙ্গলে নিয়ে গেছে। থানচিতে একই কায়দায় ডাকাতি থানচিতে গতকাল দুপুর ১টার দিকে সশস্ত্র গ্রুপ দুটি গাড়িতে এসে পাশাপাশি থাকা কৃষি ও সোনালী ব্যাংক শাখায় হামলা চালায়। এ দুই ব্যাংকের পাশেই থানচি থানা। কৃষি ব্যাংক থানচি শাখার ব্যবস্থাপক হ্লা সুই থোয়াই জানান, অস্ত্রধারীরা ব্যাংকে ঢুকে সবাইকে একটি কক্ষে ঢুকিয়ে বাইরে থেকে আটকে দেয়। ভল্ট ভাঙতে পারেনি। ক্যাশে থাকা পৌনে তিন লাখ টাকার মতো নিয়ে গেছে। থানচি সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অং প্রু ম্রো বলেন, দুপুর ১টার দিকে থানচি সদরের শাহজাহানপুরের দিক থেকে তিনটি চাঁদের গাড়িতে সন্ত্রাসীরা গুলি করতে করতে বাজার এলাকায় ঢোকে। এর পর থানচি উচ্চ বিদ্যালয়-সংলগ্ন সোনালী ও কৃষি ব্যাংকের ভেতরে ঢুকে টাকা নিয়ে যায়। এর পর তারা আবার ওই তিন গাড়িতে শাহজাহানপুরের দিকে চলে যায়। স্থানীয়রা বলেন, এ কারণে দুই ব্যাংকেই অনেক গ্রাহক ছিলেন। অস্ত্রধারীরা সোনালী ব্যাংকে ঢুকেই ব্যবস্থাপককে খুঁজতে থাকে। না পেয়ে ক্যাশে থাকা টাকা নিয়ে যায়। সশস্ত্র দলটির সঙ্গে খাকি পোশাকে কয়েকজন নারীও ছিল। ব্যাংক লুট শেষে সশস্ত্র দলটি থানচি বাজারে প্রকাশ্যে ব্রাশফায়ার করে। এর পর গাড়িতে চাঁদাপাড়া এলাকার সড়ক হয়ে বাজার ছেড়ে চলে যায়। স্থানীয় আরেকজন বলেন, ‘চাঁদাপাড়া এলাকায় নদীর পাড়ে কয়েক দিন ধরে নাটকের শুটিং চলছিল। অনেকে প্রথমে মনে করেছি, সেই নাটকেরই শুটিং চলছে। পরে বাজারে প্রকাশ্যে ব্রাশফায়ার যখন করল, তখন আমরা বুঝতে পেরেছি– এটি ডাকাতি।’ থানচির কৃষি ব্যাংকের ব্যবস্থাপক হ্লা সুই থোয়াই জানান, ইউনিফর্ম পরে সাত-আটজন ব্যাংকে ঢোকে। তাদের কারও কারও হাতে ওয়াকিটকি ছিল। ওপাশ থেকে টাকা লুট করার নির্দেশ দিচ্ছিল কেউ। নাম প্রকাশে ভীত একজন গাড়িচালক জানান, ভুসি বহন করার কথা বলে তংকংপাড়া থেকে একজন ফোন করে দুটি গাড়ি লাগবে বলে জানায়। ভাড়া ঠিকঠাক হওয়ার পর তংকংপাড়ায় গিয়ে দেখেন, কেএনএফ সদস্যদের পোশাক পরিহিত ৪০-৫০ জন দাঁড়িয়ে আছে। এর পর ওই দুই গাড়িতে ভাগ হয়ে তারা থানচিতে আসে। আরেকটি সূত্র জানায়, থানচিতে সোনালী ব্যাংকে ডাকাতির খবর জানার পর বিজিবির একটি টিম ঘটনাস্থলে যায়। এ সময় ম্যানেজার ভল্টের টাকা নিরাপদে বান্দরবানে সদর শাখায় পৌঁছে দেওয়ার অনুরোধ করেন। বিজিবি পাহারা দিয়ে ভল্টের টাকা বান্দরবান সদরে নেওয়া হয়। বান্দরবানের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) আবদুল করিম সমকালকে বলেন, বৃহস্পতিবার থেকে সব বাহিনীর যৌথ অপারেশন চলবে। অপহৃত ম্যানেজারকে উদ্ধারে চেষ্টা চলছে। হামলার আগে বন্ধ রাখা হয় বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র রুমায় সোনালী ব্যাংকে ঢোকার আগে কেএনএফ সদস্যরা বৈদ্যুতিক সাবস্টেশন বন্ধ করে। পরে তারা সোনালী ব্যাংকের দিকে যায়। সেখানে পুলিশ মোতায়েন ছিল। পুলিশ সদস্যের বেশির ভাগ এবং সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপক স্থানীয় মসজিদে তারাবির নামাজে ছিলেন। বুধবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। তিনি বলেন, কেএনএফ সেই সময় ঢুকে পুলিশের গার্ড কমান্ডার উপসহকারী পরিদর্শক মামুনুর রহমান ও কনস্টেবল তৌহিদুল ইসলামকে আহত করে দুটি এসএমজি ও আটটি চীনা রাইফেল লুট করে এবং উপজেলা কমপ্লেক্সে থাকা আনসার সদস্যদের শটগানগুলো নিয়ে নেয়। রুমা থেকে লুট হয়নি টাকা রুমার সোনালী ব্যাংকের শাখা থেকে কোনো টাকা লুট হয়নি। ওই ব্যাংকের ভল্টে থাকা সব টাকা অক্ষত আছে। বুধবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিশেষ পুলিশ সুপার শাহনেওয়াজ খালেদ বলেন, সিআইডির চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার ইউনিটের দুটি দল রুমায় গিয়ে বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করেছে। পরে ব্যাংকের ভল্ট খুলে সব টাকা গুনে দেখা যায়, মঙ্গলবার রাখা ১ কোটি ৫৯ লাখ ৪৬ হাজার টাকার পুরোটাই রয়েছে। তিনি আরও বলেন, দুটি চাবি একসঙ্গে দিয়ে ভল্ট খুলতে হয়। কোনো কারণে অস্ত্রধারীরা হয়তো ভল্ট খুলতে পারেনি। জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠিন ব্যবস্থা রুমায় ব্যাংক ডাকাতির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠিন ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। বুধবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান আইজিপি। তিনি যখন রুমা পরিদর্শনে ছিলেন, তখন ভরদুপুরে থানচিতে কৃষি এবং সোনালী ব্যাংকে হামলা চালায় এক দল সশস্ত্র গোষ্ঠী। সাংবাদিকরা এ বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশপ্রধান বলেন, ‘আমরা একটু আগেই বিষয়টি শুনেছি। আমরা সতর্ক ছিলাম বলেই তারা এসে পালিয়ে গেছে। আমরা এ বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করছি।’ বন্ধ থাকবে তিন শাখা ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনায় বান্দরবানে আজ বৃহস্পতিবারও সোনালী ব্যাংকের সাতটি শাখার মধ্যে তিনটি বন্ধ থাকবে। এগুলো হলো– রুমা, থানচি ও রোয়াংছড়ি। এসব শাখার গ্রাহকরা অন্য শাখা থেকে লেনদেন করতে পারবেন। পর পর দু’দিন অস্ত্রধারীদের হামলার পর গতকাল বুধবার সোনালী ব্যাংকের বান্দরবান সদর শাখা ছাড়া অন্যগুলো বন্ধ ছিল। সোনালী ব্যাংকের বান্দরবান অঞ্চলপ্রধান ওসমান গনি সমকালকে বলেন, রুমা শাখার ভল্ট খতিয়ে দেখে সব টাকা অক্ষত পাওয়া গেছে। কোনো টাকা খোয়া যায়নি। আর থানচি শাখায় কত টাকা খোয়া গেছে; পূর্ণাঙ্গ হিসাব চলছে। তবে খোয়া যাওয়া টাকার পরিমাণ ১৫ লাখ টাকার আশপাশে। এ ব্যাপারে সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আফজাল করিম বলেন, ভারী অস্ত্র নিয়ে সন্ত্রাসীরা শাখায় ঢুকে পড়ে। এ কারণে প্রতিরোধ করা যায়নি। কৃষি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শওকত আলী খান বলেন, দুপুরের দিকে ১০ থেকে ১৫ জনের একটা সশস্ত্র গ্রুপ থানচি শাখায় হানা দেয়। তখন শাখায় গ্রাহকরা ছিলেন। অস্ত্রের মুখে গ্রাহক ও কর্মকর্তাদের জিম্মি করে রাখে তারা। ক্যাশ থেকে কিছু টাকা নিয়ে গেছে। তারা ভল্ট ভাঙার চেষ্টা করলেও পারেনি।
Published on: 2024-04-04 04:16:40.167368 +0200 CEST