বারান্দায় ইজিচেয়ারে হেলান দিয়ে বসে আছেন আনিস মিয়াঁ (ছদ্মনাম)। হাতে তার পত্রিকা। প্রতিদিন পত্রিকা পড়তে পড়তে প্রায়ই চোখ লেগে যায় তার। সেদিনও তাই হয়েছিল। তন্দ্রা কাটলো মাইকের আওয়াজে। রিকশাটা চালাচ্ছেন এক যুবক, তার পেছনে বসে বড় নীল মাইকে বকবক করে যাচ্ছেন আরেক মধ্যবয়স্ক লোক। সামনে নির্বাচন, তাই এই মাইকিং; প্রচারণা প্রায়ই চলবে। গাড়ির পেছন পেছন দৌড়াতে থাকবে কচিকাঁচারা। এই ছোটছোট ছেলেমেয়েরা বিষয়বস্তু বোঝে না। মাইকিং দেখলেই ছুটে আসে, এরপর মাইকের শব্দের সাথে তাল মিলিয়ে নাচতে থাকে। কেউ কেউ আবার ঝুলেও যায় রিকশা বা ঠেলাগাড়ির পেছনে। এই দৃশ্যগুলো খুব উপভোগ করেন সত্তর বছর বয়সি আনিস। যেন তার ছেলেবেলার দিনগুলোই ভেসে ওঠে চোখের সামনে!
খুব বেশিদিন নয়, দুই যুগ আগেও মানুষের কাছে নির্বাচন মানে ছিল একটা উৎসব। গান-বাজনা; অমুক ভাইয়ের নামে গান, স্লোগান; মিছিল, সভা সবটাই করা হতো বিরাট আয়োজনের মাধ্যমে। সে সময়ে নির্বাচন মানেই ছিল উৎসবমুখর আবহ বিরাজ করবে চারপাশে। গ্রাম বা মফস্বলের দিকে সে জৌলুস ছিল দেখার মতো। রিকশা, বেবি ট্যাক্সি বা ভ্যানগাড়িতে হর্ন সেট করে মাইকে বাজানো হতো নিজেদের প্রার্থীর গুণগান বা স্লোগান। গ্রামের বুড়ো থেকে শুরু করে শিশু — সবাই সে গাড়ির পেছনে পেছনে হেঁটে বেড়াতেন।
সময়ের আবর্তনে সেই উৎসবের আমেজ সেভাবে লক্ষ্য করা যায় না আর। ছোট হয়ে আসছে মাইক নিয়ে সুন্দর স্মৃতির গণ্ডিও। এটির ব্যবহারও বিলুপ্তপ্রায়। এই জায়গা দখল করে নিয়েছে হ্যান্ড মাইক। তবে মাইকের ব্যবহার একেবেরেই কিন্তু থেমে যায়নি!
নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মাইকের ব্যবহার বর্তমানে কেমন তা জানতে সেদিন বেরিয়ে পড়েছিলাম গুলিস্তান, পাটুয়াটুলী, নবাবপুরের মাইক প্রস্তুত আর বিপনণের সঙ্গে যুক্ত দোকানের খোঁজে।
যে সময়ে চাহিদা বাড়ে মাইকের
একটা সময় ছিল যখন উৎসব-অনুষ্ঠান মানেই যেন মাইকে চলবে গান-বাজনা। এই ব্যবসার সাথে সম্পৃক্ত দোকানিদেরও সুদিন ছিলো তখন। এর মধ্যে প্রযুক্তি খাতে শুরু হয় অন্যরকম বিপ্লব। এর সাথে মাইকের উন্নয়নও হতে শুরু করে। বাজারে চালু হয় মাইকের আধুনিক সংস্করণ, 'হ্যান্ড মাইক'। ধীরে ধীরে মাইকের জায়গাও নিতে শুরু করে এটি। মাইক্রোফোন, অ্যামপ্লিফায়ার, ড্রাইভার ইউনিট এবং হর্নের সমন্বয়ে যে মাইকিং সিস্টেম, তাতে আগ্রহ হারাতে শুরু করেন ক্রেতারা। তবে একেবারেই তা থেমে যায়নি। কেউ কেউ এখনো মাইকেই খুঁজে পান ভরসা।
বছরের ১২ মাসে মাইকের বিক্রি সমান থাকেনা। এমনকি এটির বিভিন্ন সরঞ্জাম আমদানিও সবসময় একই মাত্রায় করা হয় না। দোকানদারদের মতে জানুয়ারি মাস বা শীতের মৌসুমে বেড়ে যায় মাইক বিক্রি। কারণ এই সময়ে বিয়ের ধুম পড়ে যায় চারদিকে। আবার রমজান মাসে ওয়াজ-মাহফিল শুরু হলে বেড়ে যায় মাইকের বিক্রি।
মাইক ব্যবসায়ী শাহ আলম বলেন, "সাধারণত বছরের দুই সময়ে মাইকের বিক্রি বাড়ে; শীতের মৌসুম এবং রমজানের সময়। আমাদের দেশের মানুষ মৌসুমকেন্দ্রিক মাইক কেনে বলে বছরের শেষের দিকে (ডিসেম্বর–জানুয়ারি) সর্বোচ্চ বিক্রি হয়ে থাকে।"
ধর্মীয় সংস্কৃতির অংশ হিসেবে দেশে প্রতিবছর ওয়াজ-মাহফিল হয়। শীতকালে বা শবে বরাতের আগে এই আয়োজন আরও তীব্র রূপ নেয়। এ সময়ে মাইকের বৃহৎ পরিসরে বিপণন হয়ে থাকে। তাছাড়া অন্যান্য ধর্মের ধর্মীয় অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে মাইক এখনো অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ।
মফস্বলের ক্রেতারাই বেশি কেনেন মাইক
গুলিস্তান, পাটুয়াটুলী এবং নবাবপুর ঘুরে পাইকারি বিক্রেতাদের কাছে জানা গেছে, মাইক ক্রয়ে এগিয়ে আছেন মফস্বলের মাইক বিক্রেতারা। এখান থেকে কিনে তারাই গ্রামে-গঞ্জে মাইক খুচরা বিক্রি করেন বা ভাড়া দেন। মফস্বলের তুলনায় গ্রামের দিকে মাইকের ব্যবহার এবং চাহিদা তুলনামূলক বেশি।
এমন এক ক্রেতা হলেন রংপুরের মো. হানিফ। মাইকের একজন খুচরা ব্যবসায়ী তিনি। ঢাকায় আসেন মাইকের সরঞ্জাম কেনার উদ্দেশ্যে। এখান থেকে কিনে নিয়ে তিনি আবার সেগুলো নিজ এলাকায় বিক্রি করেন বা ভাড়া দেন। আবার কেউ কেউ একবারে কিনে নেওয়াকে লাভজনক মনে করেন। কারণ ভাড়াতেই ৪–৫ হাজার টাকা খরচা করতে হয়।
হাবিব কো-এর পাইকারি বিক্রেতা মো. মানিক বলেন, "সারা বাংলাদেশের খুচরা ক্রেতারা এসে আমাদের এখান থেকেই কিনে নিয়ে যান মাইকের সব জিনিসপত্র। তবে শহরের ক্রেতার চেয়ে সংখ্যায় মফস্বলের ক্রেতাই বেশি।"
নির্বাচন এলেই বাড়ে মাইক ব্যবসা-ব্যবহার
খুচরা ব্যবসায়ী সবুজ বলেন, "নির্বাচনের সময়ে মাইকে গান-বাজনা চালিয়ে পুরো গ্রাম চক্কর দেওয়া হয়। অনেকদিন ধরে এসব প্রচার-প্রচারণা চলতে থাকলেও গ্রামবাসী বিন্দুমাত্র বিরক্ত না হয়ে বরং সেসব উপভোগ করেন।"
ষাটোর্ধ্ব শাহ আলমকে মাইক নিয়ে জানতে চাইলেই তিনি যেন হারিয়ে গেলেন পুরোনো সেই দিনগুলোতে।
"বেশিদিন নয়, এই তো ১৫–২০ বছর আগে কথা। নির্বাচন এলে আমরা সবাই রাত-দিন এক করে কাজ করতাম। এত ব্যস্ত সময় পার করলেও খারাপ লাগেনি কোনোদিন। কারণ বিক্রি বাড়লে খুশিই লাগত," এ মাইক ব্যবসায়ী।
অবশ্য এখনো নির্বাচনে যত মিছিল-সভা, প্রচার-প্রচারণা করা হয়, সেসব কাজে মাইকেই যেন ভরসা সবার। তাই নির্বাচন এলেই অন্যান্য সময়ের তুলনায় বেড়ে যায় কেনাবেচা। দোকানে দোকনে আসতে থাকে অর্ডার। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা হয় মাইকের বিভিন্ন যন্ত্রাংশের। দেশীয় কারখানায়ও বেড়ে যায় হর্ন প্রস্তুতির কাজ।
বিক্রেতা মো. আমিন বলেন, "আগে নির্বাচনের সময়ে প্রচুর মাইক বিক্রি হতো। এখন আগের মতো বেচাকেনা না থাকলেও বিক্রি যা একটু বাড়ে, তা নির্বাচন ঘনালেই বাড়ে। তাই দোকানে বেশি করে মালামাল নিয়ে আসি।"
২৫ বছর ধরে মাইকের ব্যবসায় নিযুক্ত জাহাঙ্গীর বলেন, "আগে নির্বাচনের সময়ে মাইকের চাহিদা যদি ৮০ শতাংশ হয়ে থাকে, বর্তমানে সে চাহিদা এসে দাঁড়িয়েছে ৬০ শতাংশে। বাকি ৪০ শতাংশ বাজার দখল করে আছে হ্যান্ড মাইক। তবুও নির্বাচন এবং বছররে কিছু সময়ে বিক্রি বাড়ে বলে এই ব্যবসা টিকে আছে।"
তবে এখন শহরাঞ্চলে নির্বাচনী প্রচারণার ধরনেও এসেছে নতুনত্ব। আজকাল শহরাঞ্চলে দেখা যায় পিকআপে করে বিশালাকার স্পিকার নিয়ে উচ্চশব্দে সেটি বাজিয়ে চলছে প্রচারণার কাজ।
ভারতীয় আহুজা মাইক সবচেয়ে জনপ্রিয়
হর্নের সাথে ব্যবহারের উদ্দেশ্যে যে অ্যামপ্লিফায়ার, ড্রাইভার ইউনিট বা মাইক্রোফোন ব্যবহৃত হয়; তার মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয়গুলো তৈরি করে ভারতীয় কোম্পানি আহুজা। নির্বাচনকে উপলক্ষ্যে দিল্লি থেকে বাংলাদেশে আহুজার পণ্যের আমদানিও বেড়ে যায়। মাইক প্রস্তুতকারী দেশীয় কোম্পানি অ্যামপ্লিফায়ার-ড্রাইভার ইউনিট বিক্রি করলেও ভারতীয় আহুজাই জনিপ্রিয়তার শীর্ষে বলে জানালেন বিক্রেতারা।
বাংলাদেশের জনপ্রিয় মাইক উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান হলো রয়েল। তবে বিক্রেতাদের দাবি, আগের মতো সেভাবে বেচাকেনা হয় না এই মাইক। গুণগত মানের কারণে আহুজাতেই ভরসা সবার। কিন্তু আহুজার মধ্যেও আছে আসল-নকলের ধাঁধা। সব আহুজা ভারত থেকে আনা হলেও এর মধ্যে মাইকের ভেতরের যন্ত্রাংশের কাঁচামালে থাকে ভিন্নতা।
তাই অনেক সময় ব্যবসায়ীরাও নাকি বুঝতে পারেন না কোনটি প্রকৃত আহুজার পণ্য। তবে ৪৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে ব্যবসা করা হাবিব কো-তে পাওয়া যাবে আহুজার আসল মাইক। বাংলাদেশে একমাত্র তারাই আহুজা মাইক আমদানি করে। তাই এখান থেকেই মাইক কিনে নেন খুচরা বিক্রেতারা।
মাইকের দাম
একটি মাইকিং সিস্টেমের গড়ে ওঠে অনেকগুলো যন্ত্রাংশের মাধ্যমে। এগুলো হচ্ছে মাইক্রোফোন, অ্যামপ্লিফায়ার, ড্রাইভার ইউনিট, এবং হর্ন। এসব যন্ত্রাংশের দাম বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে। ১০–১২ হাজার থেকে শুরু হয়ে দাম ৪০–৪৫ হাজার টাকা পর্যন্ত গড়ায়। পণ্যের মানের ওপরও দাম নির্ভর করে।
আহুজার একটি ৩০ ওয়াটের অ্যামপ্লিফায়ার ১০ হাজার টাকা, ৬০ ওয়াটের অ্যামপ্লিফায়ার ১৪ হাজার টাকা, ১৬০ ওয়াটের অ্যামপ্লিফায়ার ২১ হাজার টাকা এবং ২৫০ ওয়াটের অ্যামপ্লিফায়ার সাড়ে ২৬ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। অন্যদিকে ড্রাইভার ইউনিটের দাম সর্বনিম্ন দুই থেকে সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার টাকার কাছাকাছি হয়ে থাকে।
চাহিদা কমার অন্যতম কারণ বাড়তি দাম
একসময় মাইকের চাহিদা ছিল আকাশচুম্বী। ব্যবসায় লস বলতে কিছু ছিল না বিক্রেতাদের। কিন্তু মাইকের ব্যবসায় মন্দা নামার পর বেড়ে গেছে পণ্যটির দামও। এতে করে মাইক না কিনে বিকল্প পণ্য হ্যান্ড মাইকের প্রতি ঝুঁকছেন অনেকেই।
সবকিছুর সাথে পাল্লা দিয়ে মাইকের দামও অতিরিক্ত বেড়ে যাওয়া এর চাহিদা কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ। দেশের বাইরে বা অভ্যন্তরে, যেখান থেকেই কেনা হোক, তাতে মূল্যহ্রাসের কোনো লক্ষণ নেই। প্রতিটি পণ্যের দাম ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা করে বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানান বিক্রেতারা। দাম বেড়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা অতিরিক্ত কর আরোপকেও দায়ী করেছেন।
কিন্তু দাম বাড়লেও যে পরিমাণ লাভ হওয়ার কথা, সেটাও করতে পারছেন না ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ী মো. আমিন বলেন, "আগে দাম কম হলেও লাভ থাকত, কারণ তখন বিক্রি ছিল বেশি। এখন দাম বেড়েছে, কিন্তু কোনো লাভ নাই। নিজেদের পেট চালানোর জন্য একেবারে অল্প লাভে বিক্রি করে দিই।"
হর্ন তৈরি হয় দেশেই
মাইকিং সিস্টেমের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো হর্ন। যে বস্তুটিকে আমরা মাইক বলে চিনি তা আসলে হর্ন—সামনে গোলাকার এবং পেছনের দিক লম্বা হয়ে কিছুটা দীর্ঘ। অনেকেই চোঙা হিসেবেও চেনেন এটিকে। মাইক শব্দটির নির্দিষ্ট কোনো অবয়ব নেই। হর্ন, ড্রাইভার ইউনিট, অ্যামপ্লিফায়ার, মাইক্রোফোন; এগুলো মিলিয়ে পুরো মাইকিং ব্যবস্থাটিকেই মাইক নামে বোঝানো হয়ে থাকে।
এই মাইকিং সিস্টেমের সব যন্ত্রপাতি বাইরের দেশ থেকে আমদানি করা হলেও কেবল হর্ন তৈরি হয় দেশীয় কারখানায়। কাঁচামাল ক্রয় করে কারখানার মালিকেরা তৈরি করেন এটি। দাম নির্ধারণ করেন কাঁচামালের দামের ভিত্তিতে। কারখানাগুলোর বেশিরভাগেরই অবস্থান নারায়ণগঞ্জ এবং ওয়ারিতে।
ক্রাউন ফ্যাক্টরির মালিক মো. সাজিদ ১৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে হর্ন তৈরি করছেন। তার ভাষ্যমতে, ক্রাউন ফ্যাক্টরিসহ সব মিলিয়ে বাংলাদেশে হর্ন তৈরির কারখানা আছে ৩–৪টি।
তিনি বলেন, মৌসুমভিত্তিক হর্ন তৈরি করে থাকেন তারা। নির্বাচনের সময় এটির বাজার থাকে চাঙ্গা। অন্য সময়ে ২০০ হর্ন তৈরি করলে নির্বাচনের সময়ে তা এসে দাঁড়ায় ৪০০–৫০০-তে।
কাঁচামালের গুণগত মান, আকার ইত্যাদির ওপর নির্ভর করে দাম হয়ে থাকে ভিন্ন ভিন্ন। একটি হর্নের দাম ১,১০০–১,২০০ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ১,৬০০–১,৮০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। হর্নের দামও বেড়ে হয়েছে দ্বিগুণ।
মাইকের প্রস্তুতকরণ ও বিপণনের ভবিষ্যৎ
বাংলাদেশে সর্বপ্রথম মাইকের ব্যবসা শুরু করেন পাটুয়াটুলীর ব্যবসায়ীরা। অনেক আগে থেকেই এ ব্যবসার সাথে সম্পৃক্ত যারা তাদের একজন হলেন হাসান (ছদ্মনাম)। তার দোকান যাত্রা শুরু করে ১৯৬৮ সালের দিকে। হাসান বংশ পরম্পরায় ২৬ বছর ধরে করছেন এই কাজ। একটা সময় তাদের দোকানে ভিড় ছিল দেখার মতো। প্রায় সব ক্রেতা পাটুয়াটুলী থেকেই কিনে নিতেন মাইকের সরঞ্জাম। এরপর গুলিস্তানে স্টেডিয়াম মার্কেটে শুরু হতে থাকে মাইকের আরেক বৃহৎ বাজার।
হাসানের মতে, এত দুর্দিন কখনো দেখতে হয়নি তাদের। এখন মাইকের বিক্রির যে দশা, তাতে অন্য ব্যবসায় যদি তারা নিজেদের স্থানান্তর না করেন তবে সামনে কেবল কষ্টের দিনই দেখতে হবে। দাদা-বাবার এই পেশাকে তিনি আয়ত্ত করতে গিয়ে শিখেছেন যন্ত্র তৈরির কাজও। কিন্তু তাতেও খুব একটা লাভ নেই। এই ব্যবসার পাশাপাশি শুরু করেছেন কাপড় বিক্রির কাজ। কিছুটা ভালো থাকার উদ্দেশ্যে এই উদ্যোগ। হতাশার কণ্ঠে তিনি বলেন, "মাইকের দিন শেষ হয়ে এসেছে। সামনে হ্যান্ড মাইকই হবে ভরসার জায়গা। প্রযুক্তি আরও উন্নত হবে, আরও প্রসারিত হবে। এর সাথে সাথে সমাপ্তি ঘটবে মাইকিং সিস্টেমেরও।"
তবে হাসানের মতো হতাশ নন বাকি বিক্রেতারা। অনেকেই শুনিয়েছেন আশার কথাও। ব্যবসায়ী মানিক বলেন, "যতদিন বৃহৎ জায়গায়জুড়ে জনসভা, মিছিল-মিটিং, প্রচার-প্রচারণা চলবে ততদিন মাইক থাকবে।"
Published on: 2023-12-28 09:13:51.983474 +0100 CET
------------ Previous News ------------