The Business Standard বাংলা
তীব্র গরমে চাঙ্গা এসির বাজার, চাহিদা দ্বিগুণেরও বেশি

তীব্র গরমে চাঙ্গা এসির বাজার, চাহিদা দ্বিগুণেরও বেশি

তীব্র তাপপ্রবাহে দেশজুড়ে বিপর্যস্ত জনজীবন। এরইমধ্যে রাজধানীর শীতাতপনিয়ন্ত্রণ যন্ত্র (এসি)-এর শোরুমগুলোতে ভিড় বেড়েছে ক্রেতাদের। আমদানিকারক, প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ও রাজধানীর বেশকিছু বিক্রয়কেন্দ্র ঘুরে জানা যায়, ঢাকায় গত কয়েকদিনে এসির চাহিদা অনেকাংশে বেড়েছে। বিক্রেতারা জনান, স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় এসির বিক্রি এখন দ্বিগুণেরও বেশি। বিক্রেতারা বলছেন, বাসাবাড়ির জন্যই বেশি এসি কিনছেন মানুষ। বাজারে একটন এবং দেড় টন ইনভার্টার এসির চাহিদা সবচেয়ে বেশি। রাজধানীর মগবাজার ওয়ালটন প্লাজায় এসি কিনতে আসেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আমিনুল ইসলাম। বাসায় ৫ বছরের সন্তানের কথা মাথায় রেখে তিনি নন-ইনভার্টার একটনের একটি এসি কিনতে এসেছেন বলে জানান এই প্রতিবেদককে। ওয়ালটন এয়ার কন্ডিশনারের ডেপুটি চিফ বিজনেস অফিসার সন্দীপ বিশ্বাস জানান, দেশব্যাপী ব্যাপক হারে তাদের এসির চাহিদা বেড়েছে। তিনি বলেন, "ওয়ালটন এসির মান ভালো, উন্নত এবং বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী ইনভার্টার প্রযুক্তির কারণে ওয়ালটনের এসির চাহিদা রয়েছে। চলতি মাসে আমাদের বিক্রি ব্যাপক হারে বেড়েছে।" "বাংলাদেশে চলমান সবগুলো এসি ব্র্যান্ডের মধ্যে ওয়ালটন এসির ফিচারের সংখ্যা বেশি এবং প্রযুক্তিও সবচেয়ে উন্নত," যোগ করেন তিনি। দেশে ওয়ালটন, সিঙ্গার, মিনিস্টার, ইলেক্ট্রোমার্ট, ট্রান্সকম, এসকোয়্যার বাংলাদেশ, বাটারফ্লাই, র‌্যাংগস, ইলেকট্রানিক্স, ভিশন, এলজিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এসি উৎপাদন ও বাজারজাত করছে। এসব প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা জানান, রোজার ঈদের পরে মূলত এই মৌসুমের এসি বিক্রি শুরু হয়েছে। তবে এক সপ্তাহখানেক ধরে বিক্রি বেশি হচ্ছে। কোম্পানিগুলোর ব্রাঞ্চ কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ব্র্যান্ডভেদে প্রতিটি এসির দাম ৫০০ থেকে ১,৫০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। তবে বড় কোম্পানিগুলোর দাবি, সম্প্রতি এসির দাম বাড়ানো হয়নি। দেশের বাজারে সবচেয়ে বেশি বিক্রিত গ্রি এসির বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠান ইলেক্ট্রো মার্ট। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, গত এক সপ্তাহ ধরে তাদের এসি বিক্রি স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় কয়েকগুণ বেড়েছে। এমনকি গত বছর এপ্রিলের তুলনায়ও এখন তাদের এসির বিক্রি অনেক বেশি। তবে এই সময়ে তাদের এসির দাম বাড়েনি। ইলেকট্রো মার্টের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুরুল আফসার বলেন, "গ্রি এসির চাহিদা সারা বছরই থাকে। তবে গত এক সপ্তাহে বিপুল চাহিদা তৈরি হয়েছে। ঢাকা এবং চট্টগ্রাম শহরে বিক্রি বেড়েছে দ্বিগুণের বেশি।" কোম্পানিগুলোর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দেড় বছর ধরে ডলার–সংকটের কারণে এসির দাম কিছুটা বেশি বেড়েছে। এ সময়ে প্রতিটি এসির দাম ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা বেড়েছে বলে জানা যায়। প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের মার্কেটিং ডিরেক্টর কামরুজ্জামান কামাল বলেন, "চলতি মৌসুমে আমাদের ভিশন এসির দাম বাড়ানো হয়নি। বরং ক্রেতাদের জন্য মূল্যছাড় ও মানিব্যাক গ্যারান্টিসহ বিভিন্ন সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। আগের মাসের তুলনায় এপ্রিলে ১০০ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি রয়েছে।" ইলেট্রমার্টের ডিএমডি নুরুল আফসার বলেন, "কোনো ব্র্যান্ডই গত এক বা দুই মাস এসির দাম বাড়ায়নি। তবে বাজারে চাহিদা বেশি থাকায় ডিলাররা বেশি দাম রাখছে– এমন অভিযোগ আমাদের কাছে রয়েছে।" দেশে বছরে সাড়ে পাঁচ লাখ থেকে ছয় লাখ ইউনিট এসি বিক্রি হয়। বাসাবাড়িতে এক থেকে দুই টন ক্ষমতার এসির চাহিদা বেশি। তবে এখন বেশি বিক্রি হচ্ছে দেড় টন ক্ষমতার বিদ্যুৎ–সাশ্রয়ী প্রযুক্তির ইনভার্টার এসির।
Published on: 2024-04-25 06:54:50.051113 +0200 CEST