কালের কণ্ঠ
সোনালি মুরগির কেজি ছুঁয়েছে ৪০০ টাকা, আটার দামে কিছুটা স্বস্তি

সোনালি মুরগির কেজি ছুঁয়েছে ৪০০ টাকা, আটার দামে কিছুটা স্বস্তি

ঈদুল ফিতরের আগে রাজধানীর বাজারে সোনালি মুরগির কেজি ৩২০ থেকে ৩৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এক মাসের ব্যবধানে কেজিতে ৬০ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়ে এখন ৩৮০ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে অপরিবর্তিত আছে ব্রয়লার মুরগির দাম। বাজারে আরো বেড়েছে পেঁয়াজ ও আদার দাম। কিছুটা কমেছে আটার দাম। মুরগি বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে সোনালি মুরগির সরবরাহে সংকট চলছে, যার কারণে দাম বেড়েছে। এর আগে কখনো এত দামে সোনালি মুরগি বিক্রি হয়নি বলেও তাঁরা জানান। অন্যদিকে ক্রেতারা বলছেন, সংকটের অজুহাত দিয়ে সিন্ডিকেট করে রেকর্ড দামে সোনালি মুরগি বিক্রি করছেন বিক্রেতারা। বৃহস্পতিবার (২ মে) রাজধানীর কারওয়ান বাজার, রামপুরা, বাড্ডা ও জোয়ারসাহারা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, তীব্র দাবদাহের কারণে বাজারগুলোতে ক্রেতাদের উপস্থিতি স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় কিছুটা কম। মুরগির দোকানের খাঁচাগুলোতে পর্যাপ্ত সোনালি মুরগি দেখা গেছে। তার পরও সরবরাহ সংকটের কথা বলে রেকর্ড দামে সোনালি মুরগি বিক্রি করছেন বিক্রেতারা। অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণে সাধারণ ক্রেতাদের সোনালি মুরগি না কিনে ব্রয়লার মুরগি বেশি কিনতে দেখা গেছে। সোনালি মুরগি ৩৮০ থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। যদিও গত সপ্তাহে সোনালি মুরগি বিক্রি হয় ৩৫০ থেকে ৩৬০ টাকায় এবং গত এক মাস আগে ৩২০ থেকে ৩৪০ টাকায় বিক্রি হয়। নতুন করে ব্রয়লার মুরগির দাম বাড়েনি, আগের দামেই কেজি ২০০ থেকে ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। রাজধানীর কারওয়ান বাজারের কিচেন মার্কেটের মেসার্স মা আয়েশা ব্রয়লার হাউসের ব্যবসায়ী আমজাদ হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ঈদের পর থেকেই বাজারে সোনালি মুরগির সংকট চলছে, যার কারণে কয়েক দফায় দাম বেড়ে এখন ৪০০ টাকায় উঠেছে। তবে ব্রয়লার মুরগি আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে। ’ রাজধানীর রামপুরা কাঁচাবাজারের জিহাদ ব্রয়লার হাউসের বিক্রেতা মো. বায়োজিদ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘সোনালি মুরগি কেজি ৪০০ টাকায় বিক্রি করছি, এর নিচে বিক্রি করা সম্ভব না। পাইকারি ও খামারি পর্যায়ে দাম বাড়ার কারণে বাজারে দাম বেড়েছে।’ বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সপ্তাহের ব্যবধানে রাজধানীর খুচরা বাজারে পেঁয়াজ কেজিতে পাঁচ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মানভেদে আদা কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা বেড়ে ২৪০ থেকে ২৮০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। আলু কেজি ৬০ টাকায়, দেশি রসুন কেজি ১৫০ থেকে ১৮০ টাকায় এবং আমদানি করা রসুন কেজি ২২০ থেকে ২৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অপরিবর্তিত আছে ফার্মের মুরগির ডিমের দাম, প্রতি ডজন বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১২৫ টাকায়। সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে আটার দাম কেজিতে পাঁচ টাকা কমে খোলা আটা ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে এবং প্যাকেট দুই কেজির আটা ১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) দৈনিক বাজারদরের প্রতিবেদনেও পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধির চিত্র দেখা গেছে। টিসিবির বাজারদরে দেখা গেছে, বৃহস্পতিবার রাজধানীর খুচরা বাজারে দেশি পেঁয়াজ কেজি ৬৫ থেকে ৭৫ টাকায় বিক্রি হয়, যা গত সপ্তাহে ছিল ৫৮ থেকে ৬০ টাকা। কারওয়ান বাজারের পেঁয়াজের আড়তদার মো. জালাল উদ্দিন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘পাইকারিতে পেঁয়াজের দাম এক সপ্তাহের ব্যবধানে ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে গেছে। এখন দাম বেড়ে মানভেদে দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৬২ থেকে ৬৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তাহে ৫৬ থেকে ৫৮ টাকায় বিক্রি হয়।’ রাজধানীর জোয়ারসাহারা বাজারের মেসার্স ভাই ভাই স্টোরের ব্যবসায়ী মো. নজরুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, বাজারে নতুন করে পেঁয়াজ ও আদার দাম বেড়েছে। কিছুটা কমেছে আটার দাম। এ ছাড়া সপ্তাহের ব্যবধানে নিত্যপণ্যের বাজারে তেমন পরিবর্তন নেই। প্রচণ্ড গরমের কারণে মানুষজন বাজারে আসা কমিয়ে দিয়েছে। যার কারণে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় বিক্রিও কমে গেছে বলেও তিনি জানান। সবজির বাজার ঘুরে দেখা গেছে, টমেটো, ঢেঁড়স ও পটোল প্রতি কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চিচিঙ্গা কেজি ৬০ থেকে ৭০ টাকা, বেগুন কেজি ৬০ থেকে ৮০ টাকা, শসা কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, কাঁচা মরিচ কেজি ১২০ টাকা, চালকুমড়া প্রতি পিস ৫০ থেকে ৬০ টাকা, লম্বা লাউ প্রতি পিস ৫০ থেকে ৬০ টাকা ও প্রতি কেজি কাঁচা আম ৬০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
Published on: 2024-05-03 01:01:54.524248 +0200 CEST