Bdnews24 Bangla
তাপমাত্রা কমেছে ‘অল্প’, মের শুরুতে বৃষ্টির আভাস

তাপমাত্রা কমেছে ‘অল্প’, মের শুরুতে বৃষ্টির আভাস

দেশজুড়ে বয়ে যাওয়া টানা দাবদাহের মধ্যে তাপমাত্রা কিছুটা কমে এসেছে। এর সঙ্গে বৃষ্টি হওয়ার মতো স্বস্তির খবরও দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। শনিবার চুয়াডাঙ্গায় পারদ চড়েছে ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে; যা এ মৌসুমের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এদিন ঢাকায় ৩৭ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা নথিবদ্ধ করা হয়েছে। শুক্রবার মৌসুমের সর্বোচ্চ ৪২ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা উঠেছিল চুয়াডাঙ্গায়। আর ঢাকায় ছিল ৩৮ দশমিক ২। আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক শনিবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মে মাসের ২ তারিখের দিকে বৃষ্টি হতে পারে। এটা কয়েকদিন থাকার সম্ভাবনা আছে, তখন তাপমাত্রা কমবে।” এবার বৃষ্টিপাতের প্রবণতা না থাকায় চৈত্র মাসের শেষ সময় থেকে তাপমাত্রা বাড়তে থাকে। চলতি মৌসুমে ৩১ মার্চ থেকে তাপপ্রবাহ শুরু হয় এবং ধীরে ধীরে মাত্রা বাড়তে থাকে।আবহাওয়াবিদ শাহীনুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, ১৯৪৮ সাল থেকে আবহাওয়া অধিদপ্তরের ডেটা সংরক্ষণ রাখা আছে। চলতি মৌসুমের আগের ৭৫ বছরের মধ্যে টানা সর্বোচ্চ ২৩ দিন তাপপ্রবাহ বয়ে চলে ২০২৩ সালে। ওই বছরের এপ্রিলের শেষ ১৮ দিন ও মে মাসের শুরুর ৫ দিন দাবদাহ ছিল দেশে। “এবার ৩১ মার্চ থেকে শুরু হয়েছে, এখনও চলছে টানা।” আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য মতে, এখন পর্যন্ত টানা ২৮ দিন ধরে তাপপ্রবাহ চলছে। বাতাসে তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কম হলে তাকে মৃদু তাপপ্রবাহ ধরা হয়। ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রির কম তাপমাত্রাকে বলা হয় মাঝারি এবং ৪০ থেকে ৪২ ডিগ্রির কম তাপমাত্রাকে তীব্র তাপপ্রবাহ বলা হয়। আর তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রির উপরে উঠলে তাকে বলা হয় অতি তীব্র তাপপ্রবাহ। গত বছর ১৭ এপ্রিল পাবনার ঈশ্বরদীতে ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড। এ বছরও কয়েকটি জেলায় তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে গেছে। এপ্রিল এমনিতেই দেশের উষ্ণতম মাস। চৈত্রের শেষ আর বৈশাখের শুরুতে গরমের তীব্রতায় হাঁসফাঁস করতে হয়।আবহাওয়াবিদ বজলুর রশীদের ভাষ্য, “গত বছর বাতাসে আর্দ্রতা কম ছিল। এবার আর্দ্রতা বেশি থাকার কারণে মানুষের শরীর ঘামছে, অস্বস্তি বেশি হচ্ছে। এই সময়ে পশ্চিমা লঘুচাপের প্রভাবে বৃষ্টিপাত হয়। “এবার বৃষ্টিপাত কম। কালবৈশাখী এবং বৃষ্টি না থাকার কারণে এবার গরমের তীব্রতা বেশি।” বাংলাদেশে মে মাসেও গরমের দাপট যে বেশি থাকে, সে কথা তুলে ধরে ন্যাশনাল ওশানোগ্রাফি অ্যান্ড মেরিটাইম ইন্সটিটিউটের (এনএওএমআই) সাবেক চেয়ারম্যান ড. সমরেন্দ্র কর্মকার মনে করিয়ে দিলেন, ১৯৭২ সালে এই মে মাসেই সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছিল রেকর্ড ৪৫.১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, শেষ তিন দশকে বাংলাদেশের আবহাওয়া আগের তুলনায় উষ্ণ হয়ে উঠেছে। বৃষ্টিপাত ও শীতের দিন কমছে, বছরের বড় অংশজুড়ে গরমের বিস্তার বাড়ছে। গড় তাপমাত্রা বেড়ে এপ্রিল মাস আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক সমরেন্দ্র কর্মকার বলছেন, “জলীয়বাষ্প পুঞ্জীভূত হয়ে বৃষ্টি হওয়ার কথা। সেটি পুঞ্জীভূত না হয়ে অন্যদিকে চলে যাচ্ছে। এ কারণেই গরম বেশি পড়ছে।”
Published on: 2024-04-27 13:08:15.927369 +0200 CEST